রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় হাঁসুয়ার কোপে এক গৃহবধূর হাতের দুই আঙুল বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে পুঠিয়া পৌর ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক স্মরণ রহমান ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পুঠিয়া পৌর ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক ও হামলাকারী স্মরণ রহমান (২৫) ও তার বাবা সেলিম ইবনে টিপু (৫০)। তাদের বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামে। এ ঘটনায় সেলিমের আরেক ছেলে মো. সায়েক (২২) পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুঠিয়া থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম আসমা বেগম (৪৩)। হামলার ঘটনায় ওই নারীর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ও ছেলে মেহেদী হাসান আহত হয়েছেন। গত শনিবার সন্ধ্যার পর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তাদের বাড়ি পুঠিয়া পৌর এলাকার মেডিকেলপাড়া এলাকায়। আজ সন্ধ্যায় আহত নারীকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে হাঁটাহাঁটি করছিলেন আসমা বেগম ও তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম। ছাত্রলীগ নেতা স্মরণ তাদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। এ সময় জাহাঙ্গীর তার ছেলেকে হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন। পরে স্মরণের বাবা সেলিমের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হচ্ছিল। একপর্যায়ে স্মরণ ও তার ভাই সায়েক এসে হাঁসুয়া দিয়ে হামলা করেন। আসমা বেগম বাধা দিতে গেলে স্মরণের হাঁসুয়ার কোপ আসমা বেগমের হাতের তালুতে পড়ে। আরেকটি কোপে বাঁ হাতের ছোট দুই আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্মরণের বাবা হাতুড়ি দিয়ে আসমার ছেলে মেহেদীকে আঘাত করেন। জাহাঙ্গীর আলমকেও পায়ে কোপ মারা হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে তারা পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ পুলিশ এসে স্মরণ ও তার বাবাকে আটক করে। পরে রাতে মামলা হয়।
আসমা বেগমের ছেলে মেহেদী বলেন, মাস ছয়েক আগে পৌর এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা স্মরণ মারধরের শিকার হন। তখন তিনি ঘটনাস্থল দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় স্মরণ ধারণা করেছেন, তিনি স্মরণকে মারধরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ নিয়ে অনেক দিন ধরে তারা হামলা করার জন্য ঘুরছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় সুযোগ বুঝে তারা হামলা করেন। পুলিশ গ্রেপ্তার করার সময় তারা হত্যার হুমকি দিয়ে গেছেন।
মায়ের চিকিৎসার ব্যাপারে মেহেদী বলেন, ‘ডাক্তার বলেছে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করতে পারলে হাতটি বেঁচে যেতে পারে। এ কারণে আজ সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছি। কিন্তু টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি বলে এখনো ঢাকায় পাঠাতে পারিনি।’
পুঠিয়া থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যার এই হামলার ঘটনায় রাতেই ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে দুজনের নামে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় দুই আসামিকে তারা গ্রেপ্তার করে রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
মন্তব্য করুন