ময়মনসিংহের তারাকান্দায় জোর করে বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামির নাম- মজলু মিয়া (৫০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজার এলাকার মৃত রজব তালুকদারের ছেলে। তিনি জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার সাত নম্বর আসামি।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধ হালিম উদ্দিন আকন্দ (৭০) তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাকে তিনজন লোক জোর করে চুল কেটে দিচ্ছেন। বয়স্ক মানুষটি অনেকক্ষণ চেষ্টা করে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অসহায় আত্মসমর্পণ করে বলেন, ‘আল্লাহ, তুই দেহিস।’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়।
প্রায় চার মাস আগের ওই ঘটনায় গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তারাকান্দা থানায় একটি মামলা করেন হালিম উদ্দিনের ছেলে মো. শহিদ মিয়া আকন্দ। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে মাথায় জট ছিল হালিম উদ্দিন আকন্দের। হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) এর ভক্ত তিনি। আগে পেশায় কৃষক থাকলেও এখন ফকিরি হালে আছেন। গত কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করে একদল লোক এসে তার মাথার জট, দাড়ি ও চুল জোর করে কেটে দেন। ঘটনার সময় বাধা দিতে গেলে তিনি শারীরিক নির্যাতন ও বলপ্রয়োগের শিকার হন। এ ঘটনার পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।
‘হিউম্যান সার্ভিস বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন ওই চুল কাটার কাজটি করেছিলেন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে এসে সংগঠনের সদস্যরা কাজ করেন। সংগঠনটির প্রধান ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন আশরাফীকে এ ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি করা হয়।
তারাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ টিপু সুলতান কালবেলাকে বলেন, বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। বুধবার (১ অক্টোবর) আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
মন্তব্য করুন