‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনই আমার শেষ নির্বাচন’ উল্লেখ করে গণভোট (রেফারেন্ডাম) বা পিআরের মতো দাবি আপাতত বন্ধ রেখে নির্বাচনের পথে যেতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমি চেষ্টা করেছি এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার। আমরা একটা লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই দেশে আর কোনো বিভাজন বা ভাগাভাগির রাজনীতি চাই না। সবাই মিলে সত্যিকার অর্থে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই আমরা।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী জনসভার বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
এ সময় তিনি বলেন, প্রতিহিংসা ও বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে একটি ‘শান্তির রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। গণভোট হতে হবে বা পিআর হতে হবে, না হলে ভোট হবে না— এগুলো বাদ দেন। দেশের মানুষ একটি নির্বাচন চায়। পিআর দেশের মানুষ বুঝে না। পিআরটা আবার কী? আগে ভোট হোক তারপর পিআর নিয়ে সংসদে গিয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
মির্জা ফখরুল জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, পিআর নিয়ে মিছিল-মিটিং বন্ধ করুন, দয়া করে নির্বাচনটা হতে দেন। বাংলাদেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের অস্থিরতা কাটুক। আপনাদের কাছে অনুরোধ সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।
নির্বাচনী জনসভায় মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয় নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামী ১৭ অক্টোবর সংস্কার সনদে স্বাক্ষর হবে। কীসের সংস্কার? সংস্কার কাকে বলে? কী কঠিন কঠিন শব্দ। তারপরও আমরা করছি। তিনি সাধারণের কাছে বোধগম্য করে বলেন, সংস্কার হলো ঘরের টিন বদলের মতো। ঘরে দরজা বা ঘরের টিন যেমন কয়েক বছর পরপর বদলাতে হয় বা সংস্কার করতে হয়, তেমনি রাজনীতিতেও কিছু সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ছাত্ররা মনে করেছেন দেশটাকে ঠিক করতে হলে সংস্কার করতে হবে।
নিজের রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি ১১ বার কারাগারে গেছি। শেখ হাসিনা আমাকে ভয় করত, যে কারণে কারাগারে পাঠাত। একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আমাদের অনেক ছেলে প্রাণ দিয়েছে। তাই আসুন সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করি।
দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নামা কিছু প্রতিষ্ঠানকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনাদের দাবিগুলো আপাতত বন্ধ রাখুন। নির্বাচিত সরকার এলে আপনাদের দাবি নিয়ে তখন কথা বলুন। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমেছে, তাদের উদ্দেশ্য ভালো না, তারা নির্বাচন পণ্ড করতে চায়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন— জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফ ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান তুহিনসহ অন্য নেতারা।
মন্তব্য করুন