সিরাজগঞ্জে অপহরণ ও চাঁদবাজিসহ বিভিন্ন মামলার এক আসামিকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিভিন্ন কর্মসূচিতে পাশে দেখা গেলেও পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
আসামি মোতালেব সরকার সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সুবর্ণসাড়া চরপাড়া এলাকার তারা সরকারের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের অনুসারী বলে জানা গেছে।
গত ১১ জুন তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলা করেন নাবিল মণ্ডল নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। নাবিলের অভিযোগ, জামিন না নিয়েও ‘এমপির প্রভাব’ খাটিয়ে আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) মামলার বাদী নাবিল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেলকুচির শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী মোতালেব সরকার এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের অন্যতম সহযোগী। গত ২৯ মে রাতে মোতালেব ও তার লোকজন আমার বাবা দৌলত মণ্ডল ও বড় ভাই আব্দুল মমিনকে পিস্তল ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে যায়। পরে সুবর্ণসাড়ার একটি নির্জন ঘরে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেন। এরপর আমার ভাইকে দিয়ে পা ধরে ক্ষমা চাওয়ানো হয়। পরে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দিলেও তৎকালীন ওসি সেটি নথিভুক্ত করেননি। পরে নতুন ওসি আসার পর গত ১১ জুন মোতালেবসহ ১১ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।’
এ মামলার ৯ আসামি আদালত থেকে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তবে প্রধান আসামি মোতালেব ও তার ভাই তালেব সরকার জামিন না নিয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন নাবিল।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এমপি মমিন মণ্ডলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আসামি মোতালেব যোগ দেয় দাবি করে মামলার বাদী নাবিল বলেন, ‘তারপরও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।’
এ বিষয়ে মোতালেব সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জামিনের কথা স্বীকার করেন। তবে আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি তিনি।
বেলকুচি থানার ওসি খায়রুল বাশার বলেন, সম্প্রতি মোতালেব সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেলেই সে দ্রুত সরে যাচ্ছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
এমপির পাশে মোতালেবকে দেখার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘ফেসবুকে এ ধরনের ছবি দেখেছি।’
এ বিষয়ে জানতে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
মন্তব্য করুন