প্রেমের টানে পাবনার ঈশ্বরদীতে এসে আসাদুজ্জামান রিজু (২৭) নামের এক যুবককে বিয়ে করে ঘর বাঁধলেন আমেরিকার তরুণী হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন (২০)। এদিকে নবদম্পতিকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।
আসাদুজ্জামান রিজু ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি কম্পিউটার সফটওয়্যার অ্যান্ড হার্ডওয়্যার কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করেন।
ওই তরুণী আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশের জর্জটাউন শহরের বাসিন্দা। তারা ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালি এলাকার মনিরুল ইসলামের ৬ তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে নতুন সংসার পেতেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে তারা দুজন বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমেরিকার মায়া ত্যাগ করে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন ডেভিডসন।
গত শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে পরদিন রোববার (২২ অক্টোবর) সকালে পারিবারিকভাবে ঢাকায় বিয়ে সম্পন্ন করেন। এরপর বিকেলে ঈশ্বরদীর বাড়িতে আসেন। ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আসাদুজ্জামান রিজুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের আগেই ডেভিডসন খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছেন।
আসাদুজ্জামান রিজু জানান, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন ডেভিডসন।
তিনি আরও বলেন, আমরা উভয়ে ভালোবেসে বিয়ে করে সুখের সঙ্গে বসবাস করছি। আমার বাসায় প্রতিদিন অনেক লোকজন আসছেন আমেরিকান তরুণীকে দেখতে। আমাদের সঙ্গে সেলফি তুলে তাদের শখ পূরণ করছে। আমরা সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চাই। সুখে দুখে দুজন পৃথক না হওয়ার অঙ্গীকার করছি। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
বাসাটির পরিধি ছোটখাটো হওয়ার কারণে নতুন বাসা ভাড়া নিতে হয়েছে। বাড়ির পাশেই মনিরুল ইসলামের বাড়ির একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছি। এখন বাসায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা কাটা ও গোছগাছ করতে সময় কাটছে।
হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলেন, আমি এখানে এসে ভালো আছি, আমার ভালো লাগছে।
ঈশ্বরদী শহরের বাসিন্দা খাইরুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প হওয়াতে রাশিয়া, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশের তরুণীদের দেখলেও এই প্রথম কোনো আমেরিকান তরুণী আমাদের এলাকায় আসছে। আমরা দেখতে আসছি। খুবই ভালো লাগছে।
মাইনুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, আমেরিকান মেয়ে বলে কথা, তাও আবার আমাদের এলাকার এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করে চলে আসছে। আবার বিয়েও হয়েছে। তাদের একনজর দেখতে শত শত মানুষ বাড়িতে ভিড় করছে। এজন্য আমরাও দেখতে আসছি।
আসাদুজ্জামান রিজুর বাবা আব্দুল লতিফ বলেন, আমার ছেলের কাছে যেহেতু ওই মেয়েটা আসছে তাই আমরা পারিবারিকভাবে এ বিয়ে মেনে নিয়েছি। ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে ঢাকার একটি কাজী অফিসের মাধ্যমে তাদের বিয়ে দিয়েছি। ওদের নতুন সংসারের জন্য যাবতীয় কিছু করে দেওয়া হচ্ছে।
ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসহাক আলী মালিথা বলেন, মানুষের থেকে শুনেছি আমেরিকা থেকে একটি মেয়ে প্রেমের টানে ঈশ্বরদীতে এসে বিয়ে করছেন। আমিও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়েছি। তারা বেশ ভালো আছে। আমরা নবদম্পতির জন্য শুভকামনা করছি।
মন্তব্য করুন