আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বিএনএমে যোগ দিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর। তিনি ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসনের (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী এবং মধুখালি) চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন।
সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফরকে বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দলটির নতুন মহাসচিব ড. মো. শাজাহান বলেন, সাবেক সংসদ সদস্যরা বিএনএমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। নিজ নিজ সংসদীয় আসনে তারা নির্বাচন করবেন।
এ বিষয়ে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর কালবেলাকে জানান, ‘আমি বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলকে নির্বাচনমুখী করতে আমরা প্রত্যেক আসনে প্রার্থী দেব। এই দল অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, শোষণ, দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং প্রতিবাদের সঙ্গে থাকবে।’
বিএনপির মতো বৃহৎ সংগঠন ছেড়ে দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনবিমুখ রাজনীতি করছে, তাতে দেশে বিশৃঙ্খলা হতে পারে সেজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে এসব বিষয়ের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। তাই বিএনপি ত্যাগ করেছি। এজন্য অধিকাংশ লোক আমাকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। ৭৫ শতাংশ লোক আমার পক্ষে কথা বলছে। আার ২৫ শতাংশ লোক এর বিরোধিতা করছে।’
শাহ জাফর ১৯৬৯-৭০ সালে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭০ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর বৃহত্তর ফরিদপুর সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৯ ও ৭০ সালে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর। মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর স্থানীয় কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে ফরিদপুর-১ আসন থেকে এবং পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে বাকশাল থেকে এমপি নির্বাচিত হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। এরপর ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি এবং ২০০৫ সালে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য হন। সবমিলিয়ে তিনি ৯ বার সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাসসের আলী ইসা কালবেলাকে জানান, ‘শাহ জাফর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তার কলঙ্কিত এক অধ্যায় হলো তার রাজনীতিক জীবন। কারণ এ দেশে যখনই গণতন্ত্র হরণ হয়েছে তখনই তিনি গণতন্ত্রবিরোধী স্বৈরাচারের পক্ষে নিয়েছেন। এটা তার রাজনৈতিক ইতিহাস।’
মন্তব্য করুন