দেশে ‘অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি’র প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ঘোষিত বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বিএনপির অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে ফেরার পথে হামলা চালিয়েছে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা শহরের বড় ব্রিজের পাশে লতিফ টাওয়ারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপির নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোপালপুরস্থ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের পাওয়ার হাউস পাড়ার বিদ্যুৎ অফিসে দিকে রওনা হয়। কিন্তু পথে বড় ব্রিজের মাথায় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের বাক-বিতণ্ডা হয়। পরে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে নেতাকর্মীরা শান্ত হেন। পরে বড় ব্রিজের পাশে ঘোড়া স্ট্যান্ডে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
এদিকে একই সময়ে পাবনা জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম সোহেলের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান নেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশ শেষে ফেরার পথে লতিফ টাওয়ার সামনে আসলে ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান নেয়া যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ খান মন্টুসহ ১০ জন আহত হন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা পাশের লতিফ টাওয়ার মার্কেটে আত্মরক্ষার্থে অবস্থান নিলে সেখানেও যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় শহরজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। হামলার সময় পুলিশ ও ডিবির বিপুল পরিমাণ সদস্য উপস্থিত থাকলেও তাদের কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ খান মন্টু বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছিলাম। এ সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীবাহিনী অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতিতেই নারকীয় হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমাদের জেলা আহ্বায়কসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা দোকানপাটে লুকিয়ে পড়লেও তাদের ওপর তাণ্ডব চালানো হয়।’
তবে হামলা করার বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, ‘আমাদেরও শান্তিসমাবেশ চলছিল। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে আসার পথে আমাদের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করেছে মাত্র। বিরোধী কারোর ওপর হামলা চালানোর নির্দেশনা নাই।’
এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ডি এম হাসিবুল বেনজীর বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের সমাবেশের সময় পাশ দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা যাওয়ার সময় একটা হট্টগোল হয়েছে। কোনো হামলা হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। আমরা তদন্তের পর জানাতে পারব।
মন্তব্য করুন