চলতি সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গায় শৈত্যপ্রবাহ আসছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ও ৯টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াম।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় ও ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি সপ্তাহে এ জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ। ওই দিন সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের তাপমাত্রা ছিল ৯২ শতাংশ। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা রয়েছে ৯১ শতাংশ। এদিন সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গায় অগ্রহায়ণের শেষে এসে শীত জেঁকে বসেছে। দ্রুত কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। উত্তর দিক থেকে আসা শীতল বাতাস শীতের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সন্ধ্যা নেমে আসার পরপরই শুরু হচ্ছে কুয়াশা। সকালে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত কুয়াশার আধিক্য থাকছে প্রকৃতিতে। এ সময় সড়কে হেডলাইট জ্বলে চলাচল করছে যানবাহন।
হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়ে গেছে মানুষের। বিশেষ করে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। দর্শনার দিনমজুর বাবর আলী বলেন, সকালে কাজে বের হতে পারিনি। রোদ পোহাচ্ছি।
হাটে হাটে তালা-চাবি মেরামত করেন আকনাদবাড়ীয়ার আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, শীতে সকালে সাইকেল চালিয়ে যেতে বেশ কষ্ট হয়। তবুও পেটের ধান্দায় বের হতে হয়।
বেগমপুরের হকার সাদেক আলী বলেন, সকালে ভ্যান নিয়ে বের হয়েছি। পুরনো ভাঙাড়ি জিনিস কিনব। কিন্তু শীতে সকাল সকার গ্রাম ঘুরতে কষ্ট হচ্ছে।
গ্রামে গ্রামে সাইকেল চালিয়ে ঝুরি ভাঁজা বিক্রি করতে করতে লোকনাথপুরের আইয়ুব আলী বলেন, শীতে সকালে বের হওয়াই কষ্ট।
ইটভাটার শ্রমিক ঈশ্বরচন্দ্রপুরের তরিকুল বলেন, ভোরে কাজে আসতে হয়। কাদামাটির কাজ করতে হয়। শীতে হাত-পা জমে যাচ্ছে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বয়স্ক ও শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু বিশেষজ্ঞ) ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, প্রায় শ’ খানেক শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিদিন বহির্বিভাগে দেড়শ থেকে ২০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
মন্তব্য করুন