দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ছাড়া সিলেটের ৬টি আসনের কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে ভোটের সরঞ্জাম। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সফল করতে প্রস্তুত সিলেট প্রশাসন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সিলেট জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ ও সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে এসব সরঞ্জামাদি পাঠানো শুরু হয়।
সিলেট জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে সিলেট-১ আসনের নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ শুরু হয়। ৫টি বুথের মাধ্যমে সিলেট শহরের ১০৮টি কেন্দ্রে সরঞ্জামগুলো বিতরণ করা হয়। এ সময় কেন্দ্রগুলোর প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।
তিনি বলেন, সিলেটের ৬টি আসনে মোট ১ হাজার ১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে জেলায় ৪৪৭টি ও মহানগরে ২০৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি আসনের ৭৫টি কেন্দ্রকে দুর্গম এলাকা বিবেচনায় ইতোমধ্যে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাঠানো হয়েছে ভোটের অন্যান্য সরঞ্জাম।
এ ছাড়া আগামীকাল রাত ৩টা থেকে শুরু হয়ে সকাল ৬টার মধ্যে বাকি কেন্দ্রগুলোতেও ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হবে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নজরদারি ও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সে লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে নাশকতা এড়াতে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সিলেটের ৬টি আসনে ২৮ প্ল্যাটুন বিজিবি ও আরও ২৮ প্ল্যাটুন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা আগে থেকে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, সিলেটের ৬টি নির্বাচনী আসনে এক হাজার ১৩টি ভোটকেন্দ্রের ৬ হাজার ৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই ১ হাজার ১৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৫টি কেন্দ্রকে দুর্গম হিসেবে ধরা হয়েছে। যেগুলোতে নির্বাচনের আগের দিন ব্যালট পাঠানো হয়েছে।
নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবে ৪৫ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও আরও ১৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
এ ছাড়া জেলা পুলিশের ৯৬ মোবাইল টিম কাজ করবে। প্রতি টিমে থাকবে পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য। থাকবে ১১টি স্ট্রাইকিং টিম। প্রতি উপজেলায় থাকবে ১১টি পুলিশ কন্ট্রোল রুম। মাঠে থাকবে ডিবির ৪০টি টিম। ১১টি থানায় থাকবে সাদা পোশাকে পুলিশ। জেলাপর্যায়ে প্রতি সাধারণকেন্দ্রে দুজন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন করে অস্ত্রধারী পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।
সিলেট মহানগরীতে প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে তিনজন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে চারজন করে অস্ত্রধারী পুলিশ নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবে। এ ছাড়া প্রতি ৫ কেন্দ্রে থাকবে একটি করে মোবাইল টিম এবং প্রতি থানায় ৩টি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করবে।
সব মিলিয়ে জেলা ও মহানগরে মোট ২ হাজার ২১৯ জন পুলিশ সদস্য নির্বাচনী কাজে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রতি আসনে ২টি করে র্যাবের ১২টি টহল টিম কাজ করবে। রিজার্ভ টহল টিম থাকবে আরও ৩টি। থাকবে বোম্ব ডিস্পোজাল ২টি টিমও। সবমিলিয়ে র্যাব-৯ এর ১০৮ জন সদস্য মাঠে থাকবে।
পাশাপাশি প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন পিসি, এপিসি, আনসার ও ভিডিপি সদস্য থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে আরও ১৩০ জন। সবমিলিয়ে আনসার ভিডিপির মোট ১২ হাজার ২৮৬ জন নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে।
মন্তব্য করুন