রাজশাহীর দুর্গাপুরে কিস্তির টাকা তুলতে গিয়ে হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছে তাসফি আক্তার মুন্নি (২৫) নামের এক নারী এনজিওকর্মী। ভুক্তভোগী নারী গ্রামীণ ব্যাংক জয়নগর দুর্গাপুর শাখার মাঠকর্মী।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের পারিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারিলা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে বকেয়া কিস্তি আদায় করতে যায় ওই নারী। সে সময় ঋণগ্রহীতা আনোয়ার কিস্তি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আনোয়ার ওই নারীকে মারধর করে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করতে আসে, এমনকি এসিড মারবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে এলাকাবাসীরা এসে তাদের উদ্ধার করে।
এনজিওকর্মী মুন্নি কালবেলাকে বলেন, আনোয়ার হোসেন কিছুদিন আগে বকেয়া কিস্তির টাকা পরিশোধ করে পুনরায় লোন চাচ্ছিলেন নিয়ম অনুযায়ী আমি তাকে দিতে লোন দিতে চাইনি তখনই আমার উপরে ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। আজ সকালে বকেয়া কিস্তি টাকা তার বাড়িতে নিতে আসি, টাকা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাগান্বিত হয়ে বলে টাকা কেন দেব এই বলেই আমি ও আমার স্বামীর উপরে কিল ঘুষি শুরু করে। একপর্যায়ে হাতুড়ি, হাঁসুয়া নিয়ে আমাদের ওপরে হামলা করতে আসে পরে স্থানীয় লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে।
প্রতিবেশী জালাল নামের এক ব্যক্তি কালবেলাকে বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম দেখছি আনোয়ার হাতুড়ি, হাঁসুয়া নিয়ে এনজিও কর্মী ও তার স্বামীর ওপরে হামলা করতে আসছে। এমন সময় এলাকাবাসীরা দৌড়ে এলে আনোয়ার বাড়িতে পালিয়ে যায়।
জয়নগর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আয়তুল্লা হোসেন কালবেলাকে বলেন, বখাটে আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে এলাকার লোকজনের সাথে উগ্র ও মারমুখী আচরণ করে। সে কিছুদিন আগে স্থানীয় মেম্বারকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এলাকাবাসী হিসেবে আমরা বখাটে আনোয়ারের প্রশাসনের কাছে দ্রুত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউনুস আলী কালবেলাকে বলেন, এনজিওকর্মীর ওপর হামলা হয়েছে শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি এসে দেখি আনোয়ার পালিয়ে যাচ্ছে। এসে শুনলাম নারী এনজিওকর্মীকে মারধর করেছে ও এসিড মারার হুমকিও দেয়।
গ্রামীণ ব্যাংক জয়নগর দুর্গাপুর শাখার ম্যানেজার এস এম ইসলাম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, মারধর ও হামলার ঘটনায় আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব। প্রশাসন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করি।
মারধর ও হামলার বিষয়ে জানার জন্য হামলাকারী সেই আনোয়ারকে একাধিকবার কল করা হলেও কল রিসিভ হয়নি এবং তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গেটে তালা ঝুলানো।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খায়রুল ইসলাম জানান, এনজিওকর্মীকে মারধর বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি । তবে প্রতিষ্ঠান বা কর্মী লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন