জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল সরকারি ছাঈদ আলতাফুন্নেছা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তাকে লাঞ্ছিতকারী ছাত্রলীগের অভিযুক্ত নেতারা।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যস্থতায় এক সমঝোতা বৈঠকে ক্ষমা চান তারা।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ মোল্লা, ক্ষেতলাল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী আশিক রাজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক জুল আরশ শুভ রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর কলেজে আসেন। তারা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিনাত রেহেনার কক্ষে বসেন। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকরা অধ্যক্ষের কক্ষে আসেন। দুপক্ষের মধ্যে আলোচনার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা নিজের ভুল স্বীকার করে শিক্ষকের হাত ধরে ক্ষমা চান। এ ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না বলে আওয়ামী লীগের নেতারা কলেজের শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেন।
ভুক্তভোগী ওই কলেজ শিক্ষক কালবেলাকে বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি, মামলাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী আশিক রাজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক জুল আরশ শুভর বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে কলেজ প্রভাষককে বেধড়ক মারপিট করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়। ওইদিন দুপুর আড়াইটায় কলেজ সড়কের মৎস্য খামারের সামনে তাকে মারধর করা হয় বলে জানা যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে ৩টায় ওই কলেজের শিক্ষকরা ক্ষেতলাল থানার সামনে মানববন্ধন করেন। এরপর মারধরের শিকার ওই শিক্ষক অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এ সময় কলেজের অপর শিক্ষকরাও তার সঙ্গে ছিলেন।
আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু বিচার দাবিতে রোববার (১৪ জানুয়ারি) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন কর্মসূচি দেন শিক্ষকরা। তবে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সমঝোতা হওয়ায় ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন তারা। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে নিয়মিত ক্লাস ফেরার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মজিদ মোল্লা কালবেলাকে বলেন, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কিছু সমস্যা হয়েছিল। এ নিয়ে শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ ছিল। আমি দুপক্ষকে নিয়ে বসে সমঝোতা করেছি। ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী আশিক রাজু ও জুল আরশ শুভ ওই শিক্ষকের নিকট ক্ষমা চেয়েছেন। তিনিও ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর অতি শিগগিরই মামলা প্রত্যাহার করবেন বলে কথা দিয়েছেন তিনি।
ওই কলেজের অধ্যক্ষ জিনাত রেহানা কালবেলাকে বলেন, তারা ভুল করেছিল। আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। তাদের ছাত্র মনে করে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমরা ক্লাস বর্জন করেছিলাম। সমঝোতা হওয়ায় ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। মঙ্গলবার থেকে নিয়মিত ক্লাস হবে।
মন্তব্য করুন