বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের লক্ষ্মীপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে টিনের একটি ঝুপড়িঘরে। এর আগে বিদ্যালয়ের ভবন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষার্থীরা এ টিনশেডের জরাজীর্ণ একটি ঝুপড়িঘরে ক্লাস করছে।
জানা যায়, উপজেলার কবাই ইউনিয়নের লক্ষ্মীপাশা গ্রামে ১৯৭২ সালে স্থানীয় শিক্ষা অনুরাগী বাবু নিত্য গোপাল সাহা প্রতিষ্ঠা করেন লক্ষ্মীপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯৮৫ সালে জাতীয়করণ করা হয়। ২০১৭ সালে কারখানা নদীতে সৃষ্ট ভাঙনে বিদ্যালয়ের ভবন ও খেলার মাঠ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করে লক্ষ্মীপাশা গ্রামে একটি টিনশেডের ঝুপড়িঘরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে এখন দুর্ভোগের মধ্যে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে আসছে।
বিদ্যালয়টিতে ২০০ শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাচ্ছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ ১২ জন শিক্ষক রয়েছে। বিদ্যালয়ের ঝুপড়িঘরে বৃষ্টির মৌসুমে টিনের চালা থেকে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়ে পাঠদান কক্ষে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পরে শিক্ষার্থীরা গরমের সময়। মাথার ওপরে টিনের চালা সূর্যের তাপে প্রচণ্ড গরম হলে প্রতি বছর অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর বর্ষাকালে বেশি বৃষ্টি নামলে পাঠদান বন্ধ করে ছুটি দিতে বাধ্য হন শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাওছার হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়টি নদীভাঙনের কবলে পড়ে। একাধিকবার স্থানান্তর করা হলেও ২০১৭ সালের ভাঙনের পর নতুন করে বিদ্যালয়টির ভবন এখন পর্যন্ত পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয়ের এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বিমুখ হয়ে পড়ছে। দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগে ভবন নির্মাণ করা না হলে ক্লাস করা কঠিন হয়ে পড়বে। সরকার অতিদ্রুত বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ করলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার বলেন, বিদ্যালয়টি বারবার ভাঙনের ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিদ্যালয়টি একটি ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন