সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা দক্ষিণ অঞ্চলের ১৫ গ্রামের মানুষ জরাজীর্ণ কাঠের ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের রেহাইপুখুরিয়া উত্তরপাড়া ভাঙায় ও চরনাকালিয়া খালের ওপর কাঠের সাঁকো পাড়ি দিয়ে উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয় বাঘুটিয়া ও খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে। এ ছাড়া ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এই সাঁকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। এতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে এখানকার বাসিন্দারা। আর ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পাড়ায় বিপাকে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, ৭ বছর আগে রেহাইপুখুরিয়া উওরপাড়া ভাঙা ও চরনাকালিয়া খালের ওপর নির্মিত কালভার্ট বন্যায় পানির স্রোতে রাস্তাসহ ভেঙে যায়। এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় কালভার্ট ভেঙে পড়ায় বিপাকে পড়েন। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে দুটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, অস্থায়ী এসব কাঠের ব্রিজ দিয়ে মানুষ কোনভাবে পার হতে পারলেও ভারি যানবাহন চলতে না পারায় বিপাকে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের জন্য বারবার দাবি জানিয়ে আসলেও কয়েকবার মাটি পরীক্ষা ছাড়া আর কিছু হয়নি।
রেহাইপুখুরিয়া গ্রামের কৃষক মো. মনির হোসেন ও আকবর আলী জানান, কাঠের ব্রিজ দিয়ে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারে না, বাধ্য হয়ে মাঠ থেকে ফসল মাথায় করে বয়ে আনতে হয়।
রেহাইপুখুরিয়া আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. মফিজুল ইসলাম জানান, রেহাইপুখুরিয়া কলেজ, আরপিএন শহীদ শাহজান কবির উচ্চ বিদ্যালয়, রেহাইপুখুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই জরাজীর্ণ কাঠের ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসেন। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের কথা ভেবে দ্রুত এখানে পাকা ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানান তিনি।
ব্যবসায়ী হাসান আলী ও শরিফুল ইসলাম জানান, পাকা ব্রিজ না থাকায় এলাকায় বড় গাড়ি আসতে চায় না। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে শ্রমিক দিয়ে মালামাল দোকানে আনতে হয়। স্থায়ী পাকা ব্রিজ তৈরি হলে ১৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা আরও উন্নত হবে।
বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম মোল্লা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এত বড় ব্রিজ করার কোনো সুযোগ নেই। এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে দুটি স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৫ লাখ ব্যয়ে দুটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করা হয়ছে। পুরাতন হওয়ায় সেতু দুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার যোগাযোগ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে রেহাইপুখুরিয়া উওরপাড়া ভাঙা স্থানের জন্য আমরা গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রকল্প এবং সাপোর্টিং রুলার ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাব পাঠিয়েছে। আর চরনাকালিয়া খালের ব্রিজের ডিজাইনের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি দ্রুতই টেন্ডার হবে।
মন্তব্য করুন