জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি :
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া জাজিরার বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি অফিস

তহশিলদারের ঘুষ গ্রহণ ও জাজিরার বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি অফিস। ছবি : কালবেলা
ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া জাজিরার বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি অফিস

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

সম্প্রতি তার নিজ দপ্তরে বসে সেবাগ্রহীতাদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ (ঘুষ) গ্রহণের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার দপ্তরে বসে প্রকাশ্যে সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের থেকে নগদ অর্থ গ্রহণ করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মতিউর রহমান এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, জমির মাঠপর্চা নিতে এই ভূমি অফিসে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হয়। আর কর্মকর্তার সবচেয়ে বড় দুর্নীতির জায়গা হল জমির মিউটিশন করা ও খাজনা কাটানো। জমি ক্রয় করার পরে প্রত্যেক জমির মালিককেই বাধ্যতামূলক জমির রেকর্ড (মিউটিশন) করতে হয়। সরকারি ধার্য অনুযায়ী মিউটিশন ফি ১১৭৫ টাকা। কিন্তু ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান জমির মালিকদেরকে বিভিন্নভাবে এটা ওটা বুঝিয়ে হয়রানি করে ১০ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকার চুক্তি করেন জমির মিউটিশনের জন্য। ১০ টাকা খাজনার জন্য গুনতে হয় ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। জমির মালিকেরা নিরুপায় হয়ে কর্মকর্তার ফাঁদে পা দিয়ে হাজার হাজার টাকা গচ্ছা দেয়।

মনির শিকদার নামে এক ভুক্তভোগী কালবেলাকে বলেন, এখানে কম ঘুষে বেশি ঘোরাঘুরি, বেশি ঘুষে কাজ তাড়াতাড়ি। আমি বাড়ির জমির খাজনা দিতে এসেছিলাম। আমার থেকে খাজনার রশিদে উল্লিখিত টাকার থেকে বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে।

গরম বাজার এলাকার ইউনুছ মাদবর নামে একজন কালবেলাকে বলেন, আমাকে আমার বাবা জমি দলিল করে দিয়েছে, সেই জমি মিউটেশন করতে এসেছি। তিনি আমার থেকে ৭ হাজার টাকা নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক ভুক্তভোগী বলেন, গত দুই মাস আগে আমি জমির খাজনা দিতে বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে ভূমি কর্মকর্তা আমাকে ১৫০ টাকার একটি খাজনার চেক কেটে দিয়ে ২ হাজার টাকা নিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দুর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছে। সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া কোনো নামজারি হয় না। নামজারির জন্য ১০ হাজার থেকে মোটা অঙ্ক আদায় করা হয় উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ দেওয়ার কথা বলে।

বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমানের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি গ্রাহকদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি বাড়তি কোনো টাকা নেই না। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।

এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা কালবেলাকে বলেন, আমাদের কাছে এর আগেও বড়কান্দি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তদন্ত শেষে দ্রুত তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, মুখ খুলল সৌদি আরব

পরবর্তী ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায় ব্রাজিল

‘আ.লীগ নিষিদ্ধ রাজনৈতিকভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি’

ইরানে হামলার সময় ট্রাম্প কোথায়, কী করছিলেন

গ্রেপ্তার নয়, আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল : মেঘনা আলম 

বাংলাদেশে ‘রিপাবলিক বাংলা’ টিভির সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে রিট

দুদকের মামলায় খালাস স্ত্রীসহ সাবেক উপমন্ত্রী

জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

ইরানে হামলা / ‘৪০ হাজারেরও বেশি মার্কিন সেনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে’

বেরোবির শিক্ষক গ্রেপ্তার, ওসি বদলি 

১০

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদন

১১

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা : কে কী বলছেন

১২

চোট থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশের পেস ত্রয়ী

১৩

তিন বিভাগে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

১৪

সাবেক সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা

১৫

লরির পেছনে ডাম্প ট্রাকের ধাক্কা, চালক-সহকারী নিহত

১৬

সচিবালয়ে আজও বিক্ষোভ

১৭

কন্যাসন্তানের মা হলেন অভিনেত্রী স্বাগতা

১৮

র‍্যাগিং দণ্ডনীয় অপরাধ, যা গ্রহণযোগ্য নয় : জবি প্রক্টর 

১৯

শেষ ম্যাচে এমবাপ্পেকে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী রিয়াল

২০
X