কুড়িগ্রামের উলিপুরে জাতীয় পতাকার আদলে ধানক্ষেত করে প্রশংসায় ভাসছেন মো. আবু জাফর (৩৫) নামের এক স্কুল শিক্ষক। স্বাধীনতার মাসে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি দেখতে আশপাশের এলাকা উৎসুক জনতা ভিড় করছে।
আবু জাফর উলিপুর পৌর শহরের নাওডাঙা বাকের হাট গ্রামের মো. আবু বক্করের ছেলে। তিনি উলিপুর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সরেজমিনে দেখা যায়, আবু জাফরের এক একর ত্রিশ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ক্ষেতের এক শতক জমিজুড়ে ফুটে উঠেছে সবুজ রঙের চারা দিয়ে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। জমির আইলের পাশ দিয়ে বেগুনি ধান গাছের চারা রোপণ করে ফুটিয়ে তুলেছেন পতাকার খুঁটি। বিরি-১০৪ জাতের ধানের সবুজ চারাকে পতাকার জমিন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ বেগুনি ধানের চারাকে বৃত্ত ও পতাকার খুঁটি স্বরূপ সারিবদ্ধভাবে রোপণ করেছেন তিনি।
প্রথমের দিকে ধান গাছের পাতায় সমৃদ্ধ রঙ না আসায় স্পষ্ট চিত্র বুঝা না গেলেও বর্তমানে ধান গাছের পরিপক্বতার কারণে দৃশ্যমান হয়েছে ক্ষেতটি। এমন ব্যতিক্রমী পতাকার আদলে ধানক্ষেত দেখতে প্রতিদিন লোকজন ছুটে আসছেন।
আবু জাফর বলেন, আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি চাষাবাদ করে থাকি। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ব প্রকাশে মানুষজন বিভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চায়। তেমনি আমিও চেষ্টা করছিলাম মাত্র। স্বাধীনতার মাসে জাতীয় পতাকার আদলে করা ধানক্ষেতটি দৃশ্যমান হওয়ায় মানুষজনের দেখার আগ্রহ বেড়েছে।
ধানক্ষেত দেখতে আসা মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানুষজন দেশের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ থেকেই মূলত ব্যতিক্রমী কাজ করে থাকে। আবু জাফর ভাইয়ের জাতীয় পতাকার আদলে করা ধানক্ষেতটি সত্যি প্রশংসনীয়। এমন দৃশ্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এটি দেখে অনেকের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে বলে জানান তিনি।
পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. রাজু মিয়া বলেন, আমি বিভিন্ন কারুকার্য যেমন বইয়ের পাতা ও কাপড়ের তৈরি, পাথরের তৈরি সাজানো পতাকা দেখেছি। তবে ধানের চারা লাগিয়ে যে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি বানানো যায় তা প্রথম দেখলাম সত্যি ভালো লাগল।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, একজন কৃষক দেশের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে জমিতে জাতীয় পতাকার আদলে যে শস্যচিত্র ফুটিয়ে তুলেছে সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় কৃষি বিভাগ সব সময় পাশে থাকবে বলে জানান।
মন্তব্য করুন