পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের রানী রাসমনির প্রতিষ্ঠিত রানীগঞ্জ পাটেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরের জমি অবৈধভাবে দখল করে মাটি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে।
রানীগঞ্জ বাজার সমিতি ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও মন্দিরের আশ্রিত জমিতে বসবাসকারী পাঁচ সংখ্যালঘু পরিবারকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী ও মন্দির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন বাজার কমিটির মাধ্যমে মন্দিরের জমি সুকৌশলে দখল করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাজার সমিতি ও উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসন মন্দিরের অনুকূলে বরাদ্দ থাকা ৫ একর ৯২ শতক জমি ১৯৭৫ সালে বাৎসরিক ১৭ হাজার ৬৯০ টাকা কর নির্ধারণ করে। সে হিসেবেই মন্দির কর্তৃপক্ষ ওই জমি ব্যবহার করে আসছিল।
তবে হঠাৎ করে ২০২২ সাল থেকে ঐতিহাসিক এ মন্দিরের ৯২ শতক কৃষি জমি দখল করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের চেষ্টা করে আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসন।
সেই সঙ্গে মন্দিরের নামীয় জমি ৫ একর ৯২ শতক খাস খতিয়ানভুক্ত বলে মন্দির কর্তৃপক্ষকে জানায় স্থানীয় প্রশাসন। এতে পুনরায় মন্দিরের জমিতে স্থাপনা নির্মাণে আপত্তি ও মন্দিরের নামে বন্দোবস্তের জন্য আবেদন জানায় মন্দির কর্তৃৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ২০২২ সালের জেলা প্রশাসকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে মন্দির কমিটি।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত একই বছরের ১লা নভেম্বর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমিতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
তবে হঠাৎ ওই জমিতে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ৪৬ শতক জমিতে মাটি ভরাট করে এবং দোকানপাট নির্মাণের চেষ্টা করছে। প্রতিকার পেতে মন্দিরের লোকজন জমি ফিরে পেতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিচ্ছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থানসহ এই শ্রেণির জমি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত হয়।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনামলে দক্ষিণেশ্বর দেবোত্তর এস্টেটের রানী রাসমনি তার রাজ্যের গরিব হিন্দুদের ধর্মচর্চার জন্য কালীমন্দিরসহ কয়েকটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওই এলাকার হিন্দু ধর্মালম্বীরা বংশ পরাম্পরায় কয়েকশ বছর ধরে সেখানে পূজা পালন করে আসছেন।
মন্তব্য করুন