লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দু’পক্ষের ১০জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের ৭০ জন।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ কাঁদানী গ্যাস ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ, পথচারী, দোকানী ও উভয়দলের কর্মীসহ অর্ধশত জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনাও ঘটে। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের আগের থেকে নির্ধারিত পৃথক কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে দলীয় নেতাকর্মীরা শহরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হতে শুরু করে। বিকেল ৪টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানি চৌধুরীর নেতৃত্বে শহরের গোডাউন রোড থেকে পদযাত্রায় মিছিল নিয়ে বের হন। এ সময় শহরের সামাদ একাডেমির মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যানার, ফেস্টুন ছেঁড়া শুরু করে বিএনপির কর্মীরা। এছাড়া মিছিলের মাঝামাঝি স্থান থেকে বিএনপির ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী হঠাৎ করে কলেজ রোডের দিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আসা ১৫ থেকে ২০ জনকে ধাওয়া করে। এ সময় ২টি অটোরিকশা ও একটি দোকানে হামলা চালায় তারা। এতে দোকানী, পথচারীসহ ৫ জন আহত হন। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মদিন উল্যাহ হাউজিংয়ের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয়ের জন্য দৌঁড়ে গিয়ে লুটিয়ে পড়েন এক যুবক। এর কিছুক্ষন পর ওই যুবক প্রচুর রক্তক্ষরণে মারা যায় বলে জানান ওই বাড়ির মালিক।
পুলিশ জানায়, নিহত ওই যুবকের নাম সজিব। তিনি সদরের চরশাহী ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুরগ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, সজিব কৃষকদলের চন্দ্রগঞ্জ থানা কমিটির সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ আরও জানায়, এদিকে বিএনপির মিছিলটি ঝুমুর এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। একইভাবে শহরের বাগবাড়ী এলাকায়ও সংঘর্ষ হয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্শীদের সঙ্গে। তবে ঝুমুর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে হাইওয়ে সড়কে উঠতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল ও কাঁদানী গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের ৭০ জন আহত হন।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, বিএনপি মিছিল নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। বিএনপির হামলায় সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন, সদর সার্কেল সোহেল রানাসহ পুলিশের ১০ জন আহত হন।
মন্তব্য করুন