গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো লিচু। তবে এখনো পরিপূর্ণ লাল হয়নি। তারপরও ভালো দাম পেতে বাজারে লিচু তোলা শুরু করেছেন চাষি, বাগানি ও ব্যবসায়ীরা। এতে জমে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে লিচুর হাটখ্যাত আউলিয়া বাজার।
প্রতিদিন রাত ৩টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত হাটটি লিচু চাষি, বাগান মালিক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম থাকে। চাষি, ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আউলিয়া বাজারে প্রতিদিন ৭০-৮০ লাখ লিচু বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হাজার লিচু ২৫০০ থেকে ৩০০০ হাজার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতে দেড় থেকে ২ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
এক মাসের বেশি সময় এই বাজারে প্রতিদিন লিচু বিক্রি করেন লিচু বাগানি ও চাষিরা। এখান থেকে লিচু কিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে লিচু কিনে নিয়ে যায়।
বিজয়নগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উপজেলায় এ বছর ৪৩০ হেক্টর জায়গায় লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু বাগান আছে ৯০০টিরও বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ বছর তীব্র তাপপ্রবাহ এ খরা, অনাবৃষ্টির কারণে লিচুর আকার একটু ছোট হয়েছে।
ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা। এ উপজেলায় সব ধরনের সবজি ও ফলের ভালো ফলন হয়। বিশেষ করে এখানকার সুস্বাদু লিচুর সুনাম রয়েছে বাংলাদেশজুড়ে। তাই দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পাইকাররা লিচু নিতে আসে।
হবিগঞ্জ থেকে আসা একজন পাইকার বলেন, রাত ৩টায় এখানে এসেছি লিচু নিতে কারণ এই বাজার বহু বছর যাবৎ দেখছি রাত থেকে সকাল ৯টার আগেই লিচু বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়। আমি ২ লাখ লিচু কিনেছি সকাল ৭টার আগেই। এই বাজারে পাকনাই, বম্বে, চায়না থ্রি, চায়না-২ ও এলাচি জাতীয় লিচু পাওয়া যায়।
বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নজুড়ে গত ১ সপ্তাহ যাবৎ হাজার হাজার পর্যটক আসেন লিচু বাগান দেখার জন্য এবং লিচু নেওয়ার জন্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে এ উপজেলায় লিচু আবাদ শুরু হয়। জায়গা ও শ্রম কম হওয়ার কারণে লিচু ব্যবসা শুরু করেন স্থানীয় কৃষকরা। দিনে দিনে এই উপজেলায় লিচু চাষ বাড়ছে।
মন্তব্য করুন