২০০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত একটি প্রশ্নফাঁসকারী চক্র অবৈধ উপায়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছে বলে জানিয়েছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মালিবাগ সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।
তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজের প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত এমন ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তাদের মধ্যে সাতজন চিকিৎসক আছেন।
চিকিৎসকরা হলেন, মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ও ফেইম নামে কোচিং সেন্টারের ডা. ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধান (৫০), জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ও ডা. ময়েজের স্ত্রী ডা. সোহেলী জামান (৪০), প্রাইম কোচিং সেন্টারের মালিক ও ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ডা. মো. আবু রায়হান, চক্রের অন্যতম মূল হোতা ও থ্রি ডক্টরস কোচিংয়ের ডা. জেড এম সালেহীন শোভন (৪৮), মেডিকো ভর্তি কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. মো. জোবাইদুর রহমান জনি (৩৮), জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্য ডা. জিল্লুর হাসান রনি (৩৭) ও ময়মনসিংহের বেসরকারি কমিউনিটি ব্যাজেড মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ডা. ইমরুল কায়েস (৩২)।
সিআিইডি বলছে, এরা সবাই প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত। তার মধ্যে ডা. ময়েজ উদ্দিন ২০ বছর সরাসরি প্রশ্নফাঁস চক্রের সাথে জড়িত। ময়েজ প্রশ্নফাঁস ও মানিলন্ডারিং ২ মামলাতেই এজহারনামীয় আসামি। এ ছাড়া বাকি ছয় চিকিৎসকও প্রশ্নফাঁসকারীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। এদের জন্য অনেক শিক্ষার্থী মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, দেখা যায়, অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ভালো দেওয়ার পরেও কান্না কাটি করে চান্স না হওয়া। প্রশ্নফাঁস হওয়ার কারণেই এই মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে। এই চক্র ১৬ বছরে অন্তত ১০ বার প্রশ্নফাঁস করেছে। এই চিকিৎসকরা সবাই বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সাথে মালিকানায় বা জড়িত আছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অবিভাবকদের দেওয়া বিপুল সংখ্যক ব্যাংক চেক, এটিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে মোবাইল ফোন ১৯টি, ল্যাপটপ চারটি, নগদ টাকা ২ লাখ ১১ হাজার, বিদেশি মুদ্রা ১৫ হাজার ১০০ থাই বাথ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ক্রেডিট কার্ড ১৫টি ও ভর্তির এডমিট কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন