আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা স্থগিত করল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম।
এ বিষয়ে রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও একটি পোস্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জরুরী সিন্ডিকেট সভা আহবান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের দায়িত্বে নিযুক্ত সহ-উপাচার্যের (প্রশাসন) সভাপতিত্বে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
এর প্রেক্ষিতে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তার বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তাঁর সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আবারও বাধা দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রোববার কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম। সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে উল্লেখ করেন।
রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক ছাত্রীও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। অবশেষে রাত ১টার দিকে বিক্ষোভের মুখে পোষ্য কোটা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মন্তব্য করুন