একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা, হয়রানিসহ কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সাকিব বিন রশীদ। পরে সাকিবকে ডেকে পাঠিয়ে তার সঙ্গে কী কী ঘটেছে বিস্তারিত শুনে ঢাবি প্রশাসন তার ট্রান্সক্রিপ্টের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, রেজিস্ট্রার ভবনের সেবার মান বাড়াতে করণীয় বিষয়ে এবং ভবিষ্যতে ডিজিটাইজেশনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাকিব।
সাকিব বিন রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অনার্স ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এবং টেন মিনিট স্কুলের শুরুর দিকের একজন ইন্সট্রাক্টর।
জানা গেছে, গত রোববার ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন সাকিব বিন রশীদ। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বার্তায় সাকিব বলেন, ‘যাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য হয়নি, তারা জানবেন না আসলে এই বিল্ডিংটার মধ্যে কোনো বিভীষিকা লুকিয়ে আছে। আল্লাহ না করুক, যদি আপনার একটা ট্রান্সক্রিপ্ট কিংবা সার্টিফিকেট তোলার দরকার হয়, তাহলে মনে হবে যে এটা একটা ফুল টাইম জব।’
রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সাকিব বলেন, ‘এই পুরো বিল্ডিংটাকে একটা ওয়েবসাইট দিয়ে রিপ্লেস করা সম্ভব। কিন্তু একটা না তিন তিনটা ওয়েবসাইট বানানো হয়েছে। তবুও এই বিল্ডিং রিপ্লেস হয়নি। অনেকগুলো আবেদন আপনি অনলাইনে করতে পারবেন। পুরো প্রসেসটা আবার অনলাইনে না। অনলাইনে করা আবেদনটা আপনাকে আবার প্রিন্টআউট নিতে হবে। তারপর সেটা নিয়ে এ ভবনে সশরীরে ফের আসতে হবে।’
এরপর তার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয় এই ভিডিও।
এরপর মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) তাকে কল করে ডেকে পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ভোগান্তির বিষয়টি জানানোর পর উপাচার্যের কার্যালয় সংলগ্ন সভাকক্ষে তাকে ঘিরে বৈঠক ডাকা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি শাখার প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা। বৈঠকে সাকিব বিন রশীদের আলোচিত ওই ভিডিও থেকে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগের কথা জানায় সংশ্লিষ্টরা।
এ নিয়ে সাকিব আরেকটি ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাকে রেজিস্ট্রার স্যার কল দিয়ে আসতে বলেন। আমি কিছুটা ভয়ে ছিলাম, আমাকে ভিডিও ডিলিট করতে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেপুটেশন খারাপ করেছি—এমন কোনো ধরনের বিষয়ে অভিযুক্ত করতে পারে ভেবেছিলাম। কিন্তু সে রকম কিছুই হয়নি। সংশ্লিষ্টরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, সমস্যা সমাধানে আমি তাদের আন্তরিক পেয়েছি। আমার মনে হচ্ছে, নতুন উপাচার্য এবং নতুন প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সেবা সহজীকরণে আরও উদ্যোগী হবেন।'
ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে সাকিব একটি ফর্ম সংযুক্ত করেছেন। যাতে ‘কেমন রেজিস্ট্রার বিল্ডিং চাই’-এ শিরোনামে নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানাতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন