পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করায় চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
তারা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে থেকেই সংস্কার ও আওয়ামী লীগের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাদের বৈষম্যবিরোধী লড়াইয়ের পথ ধরেই ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্টে আন্দোলন গড়ে তুলে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি।
এ সময় সাড়ে ৩ কোটি গ্রাহকের স্বার্থে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি মানবিক আচরণ, তাদের মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা। সংবাদ সম্মেলনে চাকরি ফেরত পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির শ্রমিক উইংয়ের যুগ্ম সমন্বয়কারী সজিব ওয়াফি, আব্দুল বারেক, তৌহিদুল ইসলাম, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চাকরিচ্যুত জিএম হুমায়ূন আহমেদ, ডিজিএম রাহাত হোসেন, আসাদুজ্জামান, এজিএম আব্দুল হাকিম, সালাহউদ্দিন আহমেদ, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সালাম জাভেদসহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাকরিচ্যুত ওয়্যারিং পরিদর্শক আবু সালাম জাবেদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে ক্রয় করা নিম্নমানের মালামাল দিয়ে ভঙ্গুর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা নির্মাণ করে গ্রাহক হয়রানি এবং গ্রাহক বনাম সমিতির কর্মরত কর্মচারীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ব্যর্থতার দায়ভার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর ওপর চাপানো, নানা আর্থিক অনিয়ম, কর্মক্ষেত্রে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করা কর্মীর দায় না নিয়ে বরং সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও অব্যাহত জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়নের কারণে দীর্ঘকালের অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৮ জানুয়ারি থেকে তাদের আন্দোলন শুরু হয়।
বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রেখে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারও এর যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে কমিটি করে দেয়। কিন্তু সংকট সমাধানে বিভিন্ন সময় আলোচনা হলেও আরইবি তাতে সাড়া না দিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় দমন পীড়ন চালিয়ে যায়।
সালাম জাভেদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুৎ বিভাগের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন। সংস্কারের পক্ষে সরকারের নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরাও অত্যন্ত আশাবাদী। অথচ সংস্কারের কথা বলতে গিয়ে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং মামলা দেওয়া হয়েছে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এ সময় যৌক্তিক সংস্কার চাওয়ায় জুলাই স্পিরিট ধারণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি পুনর্বহাল এবং মামলা প্রত্যাহার করে বিদ্যুতের মতো একটি সংবেদনশীল খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি করতে সরকার এবং এর সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
মন্তব্য করুন