

নেত্রকোনার পূর্বধলায় অটোস্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার পূর্বধলা চৌরাস্তা মোড়ে ইলাসপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জিহাদুল ইসলাম (৩২) পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইলাসপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের একমাত্র ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক ও পেশায় ট্রাকচালক ছিলেন।
অভিযুক্ত নিজামউদ্দিন (৫৫) একই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিহত জিহাদুলের সম্পর্কে চাচা হন। ঘটনার পরপরই তার পরিবারের সকলেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চৌরাস্তা অটোস্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করেন নিজামউদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন। সোমবার বিকেল ৩টার দিকে জারিয়াগামী এক অটোচলক দুজন যাত্রী উঠাতে গেলে স্থানীয় অটোচালক নিজাম উদ্দিন বাধা দেন। এক পর্যায়ে দুই অটোচালকের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। পরে উত্তেজিত হয়ে জারিয়াগামী অটোচালককে মারধর শুরু করেন নিজামউদ্দিন।
আহত অটোচালক স্থানীয় জিহাদুলের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তার কাছে বিচার দেন। জিহাদুল নিজাম উদ্দিনের কাছে মারধরের কারণ জানতে চাইলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে জিহাদুল ও নিজাম উদ্দিনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন ঝগড়া বিবাদ থামিয়ে উভয়পক্ষকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর নিজাম উদ্দিন ও তার ভাই শাহাবুদ্দিন তাদের বাড়ির নারীদের সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ জিহাদুলের ওপর হামলা করেন। এসময় দুপক্ষের মধ্যে তুমুল মারামারি হয়। মারামারির একপর্যায়ে নিজাম উদ্দিনের হাতে থাকা শাবল দিয়ে জিহাদুলের মাথায় আঘাত করেন। মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত জিহাদুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অন্যদিকে নিজাম উদ্দিনের বড় ভাই শাহাবুদ্দিনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় জিহাদুলের পরিবারের লোকজন জিহাদুলকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেল রানা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জিহাদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের চাচাতো ভাই আবুল বাশারসহ স্থানীয় একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুজন যাত্রীর ৬০ টাকা ভাড়ার জন্য এমন নির্মম ঘটনা কাম্য নয়। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মানুষকে এভাবে মেরে ফেলতে পারে। এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার যেন নিশ্চিত করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সজল কুমার সরকার বলেন, অটোর যাত্রী ওঠানামাকে কেন্দ্র করে অটোচালক নিজাম উদ্দিন ও তার ভাতিজা জিহাদুলের মধ্যে তর্কবিতর্ক সৃষ্টি হয়। তাদের আগে থেকেই জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতা ছিল। নিজাম উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন জিহাদুলের ওপর হামলা এবং তার মাথায় আঘাত করে। এতে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে একটি দোকান ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা হয়েছে। আশা করি আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল রহস্য উদ্ঘাটন করে আইনের আওতায় আনতে পারব।
মন্তব্য করুন