রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা করতে সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেই তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসক ও নার্সরা ঢাকায় এসে আহতদের অবস্থা পর্যালোচনা করবেন। যদি প্রয়োজন হয় এবং তারা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করেন, তাহলে সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
আইএসপিআরের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬৫ জন।
এদিকে যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের দাফনের জন্য রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের সিটি করপোরেশন কবরস্থানে জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের কবরস্থানের জন্য মাইলস্টোন স্কুলের সন্নিকটস্থ উত্তরা ১২ নম্বরের সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পরে এই কবরস্থান তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে সংরক্ষণ করা হবে।
এর আগে, উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই মডেলের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় সোমবার (২২ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে। সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। নিহতদের মধ্যে একজন পাইলট ও একজন শিক্ষিকা ছাড়া বাকিরা সবাই শিক্ষার্থী।
সোমবার (২১ জুলাই) রাতে এক ভিডিওবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এ দুর্ঘটনায় সারা দেশের মানুষ শোকাহত ও বিস্মিত। এটি এমন একটি ঘটনা, যা কল্পনারও বাইরে। আমরা নিজেদেরই জবাব দিতে পারছি না—নিহতদের পরিবারের কাছে কী বলব!
তিনি আরও বলেন, আমার বলার ভাষা নেই। এখনো হাসপাতালে অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। অনেক মা-বাবা এখনো সন্তানকে খুঁজে ফিরছেন। দুর্ঘটনার তদন্ত হবে, কিন্তু যারা চলে গেছে, তারা আর ফিরবে না।
ঘটনার পর সরকার আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিদেশে বাংলাদেশি মিশন এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে নিহত ও আহতদের স্মরণে দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন