গ্রামীণ দুস্থ ও দুর্বল নারীদের আর্থ-সামাজিক ও জীবনমান উন্নয়নে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক চালু করা হয়েছে ভিডব্লিউবি বা ভালনারেবল ওমেন্স বেনিফিট নামক সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম। যার পূর্ব নাম ছিল ভিজিডি বা ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট।
এই কার্যক্রমে প্রতি দুই বছর পরপর নির্বাচিত হন সমাজের দুস্থ নারীরা। নির্বাচিত এসব নারী খাদ্য সহায়তা পেয়ে থাকেন ২৪ মাস। আর প্রতি মাসে চাল পান তারা ৩০ কেজি করে।
কিন্তু গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের একটি ইউনিয়নের ভিডব্লিউবির সুবিধাভোগী নারীরা খাবার অনুপযোগী লাল চাল পেয়েছেন বলে অভিযোগ। তারা জানান, নিজেদের নয়, ‘হাঁস-মুরগির খাবার’ হিসেবে এ চাল পেয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় ২ হাজার ৭৩৮ জন নারী রয়েছেন। এর মধ্যে তারাপুর ইউনিয়নে কার্ড পান ১৮২ জন। কিন্তু এর আগের মাসগুলোতে তারা ভালো মানের চাল পেলেও গত মঙ্গল, বুধ এবং বাদ পড়া নারীরা বৃহস্পতিবার যে চাল পেয়েছেন তা নিম্নমানের বলে অভিযোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, চালের মান নিম্ন হওয়ায় কোন ব্যাগটি ভালো তা বাছাবাছি করছেন কার্ডধারী নারী কিংবা তাদের স্বামী-সন্তানরা। বিভিন্ন বস্তার চাল হাতে নিয়ে পরখ করছেন তারা। আর চালের মান দেখে করছিলেন ক্ষোভ প্রকাশ।
তাদেরই একজন ইয়ামিন। তিনি চাল নিতে এসেছিলেন ইউনিয়ন পরিষদে। যে বস্তাই দেখেন তার অধিকাংশই ফাটাছেঁড়া এবং চালও লাল রঙের। বস্তা বের করতে করতে তিনি বলেন, আমরা গরিব বলে কি দাম নেই আমাদের! এই পচা চালের ভাত কীভাবে খাব! দেখে মনে হয় হাঁস, মুরগির খাবার এগুলো।
আরেক নারী বলেন, বিভিন্ন বস্তা দেখে চাল বাছাই করে বাড়িতে এনেছি। বাড়িতে এনে দেখি মান খারাপ। রান্নার পর ভাত খাইতে পারি না।
চাল সুন্দরগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, উপকারভোগী নারীদের অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। চালের রং লাল এবং তা খাবার উপযোগী নয়। আমি এটা খাদ্য কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি। আশা করব, এর পর যাতে এমনটা না হয়।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুমী কায়ছার কালবেলাকে বলেন, চালের মান খারাপের বিষয়টি আমাদের কেউ অবহিত করেননি। যদি এমনটি হয়ে থাকে, তাহলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাদ্য পরিদর্শক (ওসি, এলএসডি) মো. কাইয়ুম খান কালবেলাকে বলেন, ভিডব্লিউবির চালের মান খারাপ হওয়ার কথা নয়, তারপরও দু-একটি নিচের বস্তার চাল যদি খাওয়ার উপযোগী না হয় তাহলে তা পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন