সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, সামাজিক নিরাপত্তা শুধু একটি দাতব্য খাত নয়, এটি একটি মানবিক অঙ্গীকার। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। তিনি সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোকে আরও সমন্বিত অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই করে গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারে কেবিনেট ডিভিশন কর্তৃক আয়োজিত ন্যাশনাল কনফারেন্স অন সোশ্যাল প্রটেকশন-২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলন অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের জেনারেল ইকোনমিকস ডিভিশনের সদস্য (সচিব) ড. মনজুর হোসেন, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ, বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের হেড অফ ডেভেলপমেন্ট এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি সৈয়দ হায়দার এবং ইউএনডিপির ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সোনালী দয়ারত্ন বক্তৃতা করেন।
জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা সম্মেলন-২০২৫ এবং সম্মেলনের ঘোষণাপত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলির ওপর উপস্থাপনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় শাখার অতিরিক্ত সচিব মো. খালেদ হাসান।
সম্মেলনে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার মূল্যবোধ এবং ২৪-এর জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানেরও সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল সাম্য ও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়া। সেই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাঠামোগত সংস্কার করে সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রথম কর্তব্য হল প্রতিটি নাগরিকের মর্যাদা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা নিশ্চিত করা। কাউকে পিছনে ফেলে রাখা নয় জনগণের সংগ্রাম থেকে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে, আমাদের সহানুভূতিশীল হতে হবে এবং আমাদের দেশের সব ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধিতে পৌঁছাতে হবে যেখানে আমরা গত ৫০ বছরে পৌঁছাতে পারিনি।
উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে এই কর্মসূচিগুলোর আরও কার্যকর বাস্তবায়ন এবং উপকারভোগীদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, প্রবীণ ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা বাড়াতে প্রয়োজন তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা ও সুশাসন। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উপকারভোগী নির্বাচন, বরাদ্দ প্রদান এবং তদারকির প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে হবে।
সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক এবং নাগরিক সমাজের সদস্যরা। অংশগ্রহণকারীরা সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর উন্নয়নে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনের শেষে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের উদ্যোগ আরও বিস্তৃত পরিসরে আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্তব্য করুন