জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ বার্তা প্রচার করা হয়েছে।
ওই বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দেশের সব টেলিভিশন ও অনলাইন গণমাধ্যমকে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষকে বলছি—আপনি যেখানেই থাকুন, ঘরে বা পথে, দোকানে, কারখানায়, মাঠে বা খেলাধুলার প্রাঙ্গণে—এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হোন। রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত ভিন্নতা সত্ত্বেও আমরা সবাই এক ও অভিন্ন জাতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটাই আমাদের একসঙ্গে উদ্যাপনের সময়—ঐক্যের শক্তি অনুভব করার সময়, গর্ব ও আশার এই ঐতিহাসিক দিন থেকে নতুন প্রেরণা পাওয়ার সময়।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ সই হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দুজন করে প্রতিনিধি এই সনদে সই করবেন।
গত বছর আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ৬টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে ওই খসড়ায় কিছু ত্রুটি থাকায়, তা সংশোধন করে নির্ভুল খসড়া পাঠানো হয়। এরপর গত ২০ আগস্ট ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটির ওপর যে কোনো ধরনের মতামত দেওয়ার সময় ২২ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর আবারও জুলাই সনদের নানা বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কমিশনের আলোচনা হয়।
সব দলের মতামত পর্যালোচনা এবং নির্ভুল আকারে জুলাই সনদ লিখিত আকারে চূড়ান্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সনদের চূড়ান্ত কপি সব রাজনৈতিক দলের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন