বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির গতিধারাকে ব্যাহত করতেই নির্বাচনে বিদেশিরা হস্তক্ষেপ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ কনফারেন্স হলে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর বিদেশি হস্তক্ষেপ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বর্তমান যে গতিধারা তা ব্যাহত করতেই স্বাধীন ও সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নির্বাচনে কিছু বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থার এমন হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে রূপান্তরিত হয়ে বিদেশি নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠার যে প্রচেষ্টা তা ব্যাহত করতেই তাদের এমন অপপ্রচেষ্টা। তবে তাদের বুঝতে হবে কেবল তারাই পৃথিবীর একক মোড়ল নয়। তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার দ্বারা একটি স্বাধীন দেশের ভীত পরিবর্তন হবে না পরিবর্তনকারী এদেশের জনগণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করে এদেশের সম্পদ বা কোনো দ্বীপের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সাহসী বাঙালি জাতির দুঃসাহসিক তরুণ সমাজ এবং সাধারণ জনগণ এসব বিদেশি অপশক্তি এবং তাদের মদদাতা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে শক্ত হস্তে প্রতিহত করবে। ভয় দেখিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য এই বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী সাবেক বিশেষ দূত মো. ওয়ালিউর রহমান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাদুকরী নেতৃত্বে অর্জিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে দাবিয়ে রাখা সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণভাবে জাতিসংঘের অনুচ্ছেদ তথা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি কাজ। ১৯৭১- এ স্বাধীন হওয়া প্রায় ৯৫ ভাগ বৈদেশিক নির্ভরশীলতার বাংলাদেশ এখন মাত্র ৫ ভাগ বৈদেশিক নির্ভরশীলতার দেশে পরিণত হয়েছে। সুতরাং ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশকে থামিয়ে রাখা যাবে। সকল ভয়কে দূর করে নিজ গতিতে বাংলাদেশ বরাবরের ন্যায় এগিয়ে যাবে।
সভাপতি বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তারুণ্যই হলো অদম্য বাংলাদেশের শক্তি। আমরাই একমাত্র জাতি যারা বঙ্গবন্ধুর মতো একজন বিশ্ব বিখ্যাত নেতা পেয়েছি, ৭ মার্চের ভাষণ পেয়েছি। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে তথা বিদেশিদের যত ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার আছে তাদের মনে রাখে হবে বাংলাদেশ একটি আত্মমর্যাদাশীল, বিজয়ী এবং নির্ভীক জাতি। এই বিজয়ী জাতি কোনোদিন কোনো অন্যায়ের নিকট অতীতে মাথা নত করেনি এবং অবৈধ কোনো উপায়ে এই জাতিকে কোনোভাবেই দাবিয়ে রাখা সম্ভব না। এটাই আমার ইতিহাসের শিক্ষা এবং এটাই আমাদের শক্তি। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে এই বাঙালি জাতির অদম্য পথচলাতে রুদ্ধ করতে পারবেনা। তরুণ সমাজের উচিত বঙ্গবন্ধুর চেতনা বুকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে অদম্য বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করা।
এ ছাড়াও আলোচক হিসেবে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির মাননীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট কলামিস্ট অজয় দাশ গুপ্ত। ওই সেমিনারের উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইআরডিএফবির সম্মানিত সিনিয়র সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল জব্বার খান।
মন্তব্য করুন