বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মার্কিন দপ্তর ও ব্যক্তি বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) বার্তা দিয়েছে মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির এক্স বার্তায় বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার গণতান্ত্রিক অংশীদাররা বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর গভীর নজর রেখেছে। তারা মনে করেন— স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ এবং সব দলের জন্য উন্মুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য।
The U.S. and its democratic partners are keeping a close eye on the elections process in #Bangladesh. The Bangladeshi people deserve free and fair elections that are transparent, peaceful, impartial, and open to all parties. https://t.co/LJwGYbUXXW — Senate Foreign Relations Committee (@SFRCdems) November 16, 2023
এর আগে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর, স্থানীয় সময়) নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিএনপির চলমান ‘সহিংস আন্দোলন’ নিয়ে।
বাংলাদেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনের এক সাংবাদিক মিলারকে প্রশ্ন করেন- ‘বিএনপি যেভাবে ‘সহিংসতাকে’ বেছে নিয়েছে, আপনার কী মনে হয় না এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খর্ব করছে দলটি?’
জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মিলার বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চাই। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক সেটাই আমরা চাই।’
মিলার মার্কিন নীতির কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের এই নীতির বিষয়ে এর আগেও বেশ কয়েকবার স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি।’
এর আগেও গত ২০ নভেম্বর নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকার অবস্থান জানতে চান আরেকজন সাংবাদিক। যেখানে মিলারকে প্রশ্ন করা হয়- ‘সংলাপে বসতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার আবারও একতরফা নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের আটক করছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে এক দলের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে কী উদ্যোগ নিচ্ছে?’
জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না। শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন- বাংলাদেশের জনগণ যা চায় যুক্তরাষ্ট্রও তা চায়। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ওই লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজসহ সব অংশীদারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে।
ওই ব্রিফিংয়ে মিলারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের বড় তিন দলকে নিঃশর্ত সংলাপে বসার চিঠি দিয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ৩০টিরও বেশি দল নির্বাচনে যাওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছে। কেবল বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির বর্জন কি নির্বাচনের অংশগ্রহণমূলক ও বৈধতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে?
জবাবে মিলার বলেন, আমেরিকার লক্ষ্য, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
নির্বাচন ছাড়াও ব্রিফিংয়ে উঠে আসে দেশের পোশাক শ্রমিক আন্দোলনের ইস্যুও। বাংলাদেশে শ্রমিকদের বিক্ষোভে প্রাণহানি এবং সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে মিলার বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে সহিসংতা, শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের বৈধ কার্যক্রমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার মতো বিষয়গুলোতে আমেরিকা নিন্দা জানাচ্ছে। শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর বিরুদ্ধে চলমান দমনপীড়ন নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি।
মন্তব্য করুন