সম্প্রতি মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে হ্যান্ডসেট কিস্তিতে বিক্রয়ের নির্দেশনায় মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, কিস্তির মেয়াদ ১২ মাসের বদলে ২৪ মাস করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (৮ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত ২০২০ সাল থেকে বিশেষ করে করোনা মহামারির মধ্যে যখন সবকিছু ঘরে বসে করতে হতো তখন আমরা সরকারের প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এবং বিটিআরসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দাবি পেশ করেছি।
সে সময় বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক আমাদের বলেছিলেন, অপারেটররা যদি রাজি থাকে তাহলে কমিশন অনুমোদন দেবে। আমরা এরপর অপারেটরদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করি। এমনকি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন পর্যন্ত করেছিলাম। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে হ্যান্ডসেট প্রদানের দাবিও জানিয়েছিলাম।
আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারলাম বিটিআরসি গত ৪ জুলাই মোবাইল অপারেটরদের বেশকিছু শর্ত আরোপের মাধ্যমে হ্যান্ডসেট গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রয়ের অনুমতি প্রদান করেছেন। আমরা এজন্য তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, সরকারপ্রধান এবং নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই। তবে অপারেটরদের দেওয়া শর্তের মধ্যে অন্যতম শর্ত হচ্ছে ১২ মাস বা এক বছরের মধ্যে গ্রাহকদের হ্যান্ডসেটের মূল্য পরিশোধ করার জন্য।
আমরা মনে করি, একজন গ্রাহকের পক্ষে বিশেষ করে যারা এখনো হ্যান্ডসেট ব্যবহার বা চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করেন নাই, তাদের জন্য এক বছরে কিস্তি পরিশোধ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। ফলে সরকারের যে লক্ষ্য প্রান্তিক পর্যায়ে অব্যবহৃত গ্রাহকদের ফোরজি ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের তা অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আমাদের দাবি এই কিস্তির মেয়াদ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় ৩৬ থেকে ৪৮ মাস করতে হবে। প্রয়োজনে বিটিআরসির কাছে থাকা সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল যা দিয়ে বর্তমানে আইন অনুযায়ী প্রান্তিক পর্যায়ে নেটওয়ার্কের মান উন্নয়নে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেই তহবিলের অর্থ কিস্তিতে হ্যান্ডসেট বিক্রয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে বা গ্রাহককে প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। কারণ এখানেও সরকার প্রান্তিক পর্যায়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার জন্যই হ্যান্ডসেট কিস্তিতে বিক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এবং বিটিআরসির দৃষ্টি কামনা করেছে সংগঠনটি। এর আগে গত মঙ্গলবার (৪ জুলাই) মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক পর্যায়ে কিস্তিতে স্মার্ট হ্যান্ডসেট সরবরাহ করার অনুমতি দেয় বিটিআরসি।
মোবাইল অপারেটর থেকে গ্রাহক পর্যায়ে কিস্তিতে দেওয়া হ্যান্ডসেটসমূহে সিম লকিং বা নেটওয়ার্ক লকিং চালুকরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও অনুমতি দিয়ে চিঠি পাঠায় বিটিআরসি।
মন্তব্য করুন