আজ চৈত্রসংক্রান্তি। অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিন। রাত বারোটা বাজলেই বাংলা ১৪৩০ বিদায়। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হবে নতুন বাংলাবর্ষ। নতুন বছরকে আহ্বান করতে রমনার ঐতিহাসিক বটমূলে প্রস্তুত করা হয়েছে মূল মঞ্চ।
নতুন বছরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনা বটমূলেও শুরু হবে সুরের মূর্ছনা। মঞ্চে বসেই বর্ষবরণের প্রভাতী অনুষ্ঠানে গান গাইবেন ছায়ানটের শিল্পীরা। তার আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল) রমনা বটমূলে সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে বাংলা ১৪৩১ বষকে বরণ করে নেওয়ার আয়োজন।
ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে চূড়ান্ত মহড়ায় দেড়শ শিল্পী অংশ নিয়েছেন। শিল্পীরা মূলমঞ্চে বসে সমবেত সংগীত পরিবেশন করেছেন। সমবেত গানের ফাঁকে ফাঁকে বিশিষ্ট শিল্পীদের একক কণ্ঠেও থাকছে গান ও আবৃত্তি। এবারের গানগুলো সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম, দেশপ্রেম ও আত্মবোধন আর জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।
রাজধানীতে ১৯৬৭ সালে প্রথম রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সেই অনুষ্ঠানই মূলত বাংলা নববর্ষ বরণের সাংস্কৃতিক উৎসবকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেরণা জুগিয়েছে।
সেই থেকে (১৯৬৭) পহেলা বৈশাখ উদযাপনের একটা অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গও হয়ে উঠেছে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। এরপর কেবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈরী পরিবেশের কারণে অনুষ্ঠান হতে পারেনি। ২০০১ সালে এ গানের অনুষ্ঠানে জঙ্গিরা ভয়াবহ বোমা হামলা করলেও অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েনি। এর মধ্যে করোনার কারণে ২০২০–২১ সালে বর্ষবরণের এই আয়োজন সম্ভব হয়নি।
দুই বছর পর গত বছর সাড়ম্বরে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করে ছায়ানট। প্রতি বছরের মতো এবারও জোর নিরাপত্তায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে।
রবিবার নববর্ষে ভোরের আলো ফুটতেই রাগ যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হবে। বর্ণিল এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলা বর্ষবরণে চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও শেষপর্যায়ে। এবারের শোভাযাত্রায় ভেসে উঠবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
মন্তব্য করুন