বাংলা বর্ষবরণের আয়োজনে সরকারের সিদ্ধান্ত না মেনে শাহবাগে প্রতিবাদী অনুষ্ঠান করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বিষয়টি নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের মন্তব্যের পর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে উদীচী।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে তথ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যে নির্দেশনা জারি করেছিল, সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান করা ছিল হঠকারী ও দুঃখজনক। তাদের এই আচরণে সরকার খুবই ব্যথিত ও মর্মাহত। এরপরই পাল্টা বিবৃতি দেয় উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
বিবৃতিতে বলা হয়, উদীচীর বর্ষবরণ আয়োজন নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ উদীচীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বর্ষবরণে উদীচীর আয়োজন দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তাতে বিস্মিত হয়েছে উদীচী।
উদীচীর নেতারা বলেন, যে কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো ও সংগঠিত হওয়া জনগণের সংবিধানসম্মত অধিকার। বর্ষবরণ আয়োজনের সময় সংকোচন করতে সরকারের নির্দেশের প্রতিবাদে অনুষ্ঠান আয়োজন করে উদীচী সেই সংবিধানসম্মত অধিকারই চর্চা করেছে। একইভাবে সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বর্ষবরণের দিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
উদীচী সবসময়ই মনে করে, আবহমান বাংলার সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষবরণ। আর সেজন্যই বহু বছর ধরেই এ উৎসবের বিরুদ্ধে মৌলবাদী, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নানা ধরনের অপপ্রচার ও কুৎসা রটিয়ে চলেছে।
শুধু পহেলা বৈশাখই নয়, সারা বছরই দেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজ সংস্কৃতির ধারক-বাহক নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং সংস্কৃতিবান্ধব হিসেবে দাবিদার সরকারের কাছ থেকে এ ধরনের বাধা প্রদান কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
মন্তব্য করুন