ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, জনগণ ভোট দিতে আসলে সেই ভোট নৌকায় পড়বে। নৌকাই বিজয়ী হবে এর বিকল্প নেই।
সোমবার (১৭ জুলাই) বেলা ১১টায় গুলশান মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন আরাফাত। ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী কিনা জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, আমরা জনগণকে বলছি আপনারা ভোট দেন। আমরা কিন্তু এটা বলছি না যে আপনারা নৌকায় ভোট দেন। কারণ আমরা জানি, জনগণ ভোট দিতে আসলে সেই ভোট নৌকায় পড়বে। ডানে-বামে সামনে পেছনে সব জায়গায় নৌকা আর নৌকা। নৌকাই বিজয়ী হবে এর বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ভোট দিতে পেরেছি ভালো লাগছে। ভোট তো সবসময় নৌকায় দিয়েছি, এবারও নৌকায় দিচ্ছি। প্রার্থী হয়েছি কি হইনি তার গুরুত্ব নেই, নৌকায় ভোট দেওয়াটাই সবচেয়ে বড় কথা আমার।
ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আরাফাত বলেন, আমি সকাল বেলা কয়েকটা কেন্দ্রে ঘুরেছি এবং খোঁজ নিয়েছি। সকালে একটু বৃষ্টি পড়েছে, বৃষ্টির কারণে ভোটার টার্ন আউট কম হয়েছে। গুলশান, বারিধারা, বনানীর ভোটাররা এমনিতে একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে, কিন্তু কালাচাঁদপুর শাহজাদপুর বা নদ্দার দিকে গেলে আপনারা দেখবেন ভোটার অনেক এসেছে। ভাসানটেকের দিকে গেলে দেখবেন ভোটার অনেক এসেছে। এখন কিন্তু ভোটের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ভালোই ভোটার আসছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী বলেন, কেমন ভোট পড়ছে তার জন্য ভোটকেন্দ্রে চোখ রাখতে হবে। তবে এখনই তার সঠিক ফিগার বলা যাবে না। জয়ের ব্যাপারে আমি খুব আশাবাদী।
এদিকে ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম)। সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল সোয়া ১০টার দিকে বনানী মডেল স্কুল ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।
হিরো আলম বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের এজেন্টদের ওপর হামলা করেছে। তারা আমাদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতেও দেয়নি। যারা আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে, তাদের বুকে আওয়ামী লীগের ব্যাচ ছিল। নির্বাচনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ আমার ওপর আক্রমণ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, এমন পরিবেশ যদি হয়- এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়, তার মানে তারা নিজেরাই ব্যালট মারবে (সিল), তাছাড়া এজেন্ট কেন বের করে দেওয়া হবে? এখন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কী না, আপনারা দেখার অপেক্ষায় থাকুন সবাই।
এ সবাই হিরো আলম বলেন, আমাদের এজেন্ট যতই বের করে দিক, আমরা শেষ পর্যন্ত থাকব। নির্বাচনের ফলাফল কি হয় সেটা দেখব।
অন্যদিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঞাঁ।সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা আবারও প্রমাণিত। তাই আমি এই নির্বাচন বর্জন করলাম।’
এর আগে সোমবার সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন তার মেয়াদে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনগুলো ইভিএমে করলেও ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন হচ্ছে ব্যালটে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ আসনের ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০। ১২৪টি ভোটকেন্দ্রের ৬০৫টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন আটজন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম) এবং মো. তারিকুল ইসলাম।
মন্তব্য করুন