আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, পতিত সরকার ও তাদের মদদপুষ্টদের সহযোগিতায় যারা শিল্পাঞ্চলে অরাজকতা তৈরি করছে, তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা জরুরি।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, তবে এতে নিরীহ কোনো প্রতিবাদকারী শ্রমিক যেন হেনস্তার স্বীকার না হয়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
পতিত স্বৈরাচারের মদদে শ্রমিক বিশৃঙ্খলায় অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় বিষয়ে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই সংবাদ সম্মেলন করে এবি পার্টি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশব্যাপী শ্রমিক অসন্তোষের পিছনে যেমন যৌক্তিক কারণ রয়েছে- ন্যূনতম বেঁচে থাকার মজুরি, শ্রম আইনের ভিত্তিতে অধিকার নিশ্চিত করা, তেমনি রয়েছে অনেক অযৌক্তিক দাবি- নারী কর্মীদের সাথে পুরুষের সংখ্যার সমতা, চাহিবামাত্র চাকরি প্রদান বা বেতন বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এবি পার্টি মনে করে গত ফ্যাসিবাদী আমলে শ্রমিক লীগকে পুনর্বাসনের নামে শত শত কৃত্তিম শ্রমিক সংগঠন তৈরি করা হয়েছে যেগুলোর তদন্ত সাপেক্ষে নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন ও সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল হক সানী।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমরা শিল্প পুলিশ ও সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় শ্রমিক অঞ্চলে বহিরাগত প্রবেশ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই; সম্প্রতি যেসব শ্রমিক ভাইবোন নিহত হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত সাপেক্ষে বিচার, পরিবারকে পুনর্বাসন ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসের পরিচিতি ব্যবহার করে কূটনৈতিক উপায়ে কীভাবে আমরা আবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত জিএসপি সুবিধা পেতে পারি, অথবা ৫ শতাংশ শুল্কে নামিয়ে আনতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। আমাদের বার্ষিক পোশাক রপ্তানি খাত থেকে আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারে উত্তীর্ণ করতে হবে।
ঝুট ব্যবসার দখলদারিত্বকে নিয়মের মধ্যে আনা অতীব জরুরি- সেটা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কেনা বেচা হতে পারে (অকশন/টেন্ডার) উল্লেখ করে বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি সুতা ও তুলাসহ ভারতের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প বাজার বা সক্ষমতা তৈরি জরুরি। এ সকল শিল্পে ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ যে সকল দেশের বিদেশী কর্মচারী আছে, তাদেরকে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে দেশীয় স্টাফ নিয়োগ দেবার দাবি করছি।
চাকুরির শুরুতে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শ্রম আইনভিত্তিক মূল্যবোধ শেখানো, আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করবার অনুশীলন এবং বছর শেষে মালিক-শ্রমিক মুনাফা ভাগাভাগির দাবি করছি; এতে শিল্পের প্রতির সকল পক্ষের দরদ তৈরি হবে এবং অসন্তোষ কমে যাবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, মাসুদ জমাদ্দার রানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, যুবপার্টি গাজীপুরের সদস্য সচিব সুলতানা রাজিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, মশিউল আজম সাকিব, এনামুল হক, শরন চৌধুরী, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মন্তব্য করুন