কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ০৩:১৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ আদায়ে রাজপথের কথা ভাবছে বিএনপি 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। ছবি : বিএনপির মিডিয়া সেলের পেজ থেকে নেওয়া
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। ছবি : বিএনপির মিডিয়া সেলের পেজ থেকে নেওয়া

বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর অব্যাহত দাবির মুখেও মেয়াদের নয় মাসেও জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এমন অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি মনে করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অংশ ক্ষমতায় থাকতে নানা অজুহাতে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সম্প্রতি অতীব গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন কিছু ইস্যু নিয়ে হঠাৎ করে নানা পক্ষের মাঠে আন্দোলনে নামার ঘটনাকে সন্দেহের চোখে দেখছে তারা। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ আদায়ের দাবিতে রাজপথে নামার কথা ভাবছে দলটি। কী ধরনের কর্মসূচি করা যায়-তা নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে সেই আন্দোলন যাতে কোনো অবস্থায় সংঘাতের দিকে না যায়, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার (১৯ মে) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী দুই মাস দলের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি চলবে, আর তার মাধ্যমেই দলকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করা হবে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর যে তারুণ্যের সমাবেশ রয়েছে, সেসব কর্মসূচির মাধ্যমে দলের তরুণ কর্মীদের মাঠে নামানো হবে।

ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ও খুলনায় যৌথভাবে বিশাল সমাবেশ শেষ করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বগুড়া ও ঢাকায়ও সমাবেশ হবে। সর্বশেষ ঢাকার সমাবেশে বড় ধরনের লোকসমাগম করবে। রাজধানীর ওই সমাবেশ থেকে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের দাবিতে বিএনপির অবস্থান আরও স্পষ্ট করা হবে। দলটি মনে করে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।

সূত্রমতে, বৈঠকে বিএনপি নেতারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের ফসল বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে অথবা দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা না করলে গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি। সরকারের একটি প্রভাবশালী অংশ বিরাজনীতিকরণ বা তাদের মদদপুষ্ট একটি দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে। তাদের এ চেষ্টা সফল হলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। পাশাপাশি পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেবে, যা দেশকে গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এই চেষ্টা যাতে সফল না হয়, সেজন্য করণীয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

বিএনপি নেতারা বলেন, বিভিন্ন পক্ষ নানান দাবি নিয়ে হঠাৎ করে মাঠে নামায় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অবনতিশীল। সংকট উত্তরণে দ্রুত একটি জাতীয় নির্বাচনই একমাত্র পথ। তাই নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের পক্ষে মত দেন তারা। তবে এই ইস্যুতে এখনই মাঠে নামার মতো পরিস্থিতি হয়নি বলেও অভিমত দেন বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের কেউ কেউ।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, বিএনপি এই সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে চায় না। সে কারণে এখন পর্যন্ত সরকারকে বিব্রত করার মতো কোনো কর্মসূচি দেয়নি। তবে আগামীতে সরকারের উপরে চাপ তৈরির জন্য বিএনপি ও তার মিত্ররা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচনের দিনক্ষণের দাবিতে কর্মসূচি দিতে পারে। তবে বিএনপি নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানাতে চায়।

দলটির আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, তারা মনে করেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও দ্রুত সময়ে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চান। তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণসহ বিদেশি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে সেক্ষেত্রে সরকারের ভেতর থেকে কিছু বাধা আছে। বিএনপি যদি সঠিকভাবে চাপ তৈরি করতে পারে, সেই বাধাও কেটে যাবে।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় এই বৈঠকটি শুরু হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস (অনলাইন), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (অনলাইন), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান (অনলাইন), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (অনলাইন), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (অনলাইন) এবং অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসরায়েলের ওপর চড়াও পশ্চিমের তিন শক্তিশালী দেশ

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়ায় রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা

দুপুরের মধ্যে ৫ জেলায় ঝড়ের শঙ্কা

আরও এক ভয়াল দিন কাটল গাজাবাসীর, বেড়েছে মৃত্যু

ঢাকার আবহাওয়া আজ যেমন থাকবে

যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে গেল ভারত-পাকিস্তান

২০ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

২০ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

বৈষম্যবিরোধী ১৬ নেতার পদত্যাগ, জেলা কমিটির সংবাদ সম্মেলন

১০

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বেচে দিয়েছেন অনেকে, অনেকে দিয়েছেন ভাড়া

১১

মোটরসাইকেল-অটোরিকশার সংঘর্ষ, ছাত্রদল নেতাসহ নিহত ২

১২

মাগুরায় এবার মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

১৩

সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ হলেন অতিরিক্ত আইজিপি

১৪

দেশের সেরা ‘সুব্রত খাজাঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’

১৫

ঝোপে পড়েছিল তিনটি অস্ত্র ও কার্তুজ

১৬

দুই সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত ৭

১৭

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ আদায়ে রাজপথের কথা ভাবছে বিএনপি 

১৮

অসুস্থ গোরখোদক মনু মিয়ার শেষ ইচ্ছা হজে যাওয়া

১৯

মাটি খুঁড়ে ৭৪ কেজি কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার

২০
X