দেশ ও জাতির স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা আওয়ামী অপশাসন-দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছি। জুলাই যোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।
বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানা জামায়াত আয়োজিত এক নির্বাচনী পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য দেন- জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও মিরপুর পূর্ব থানার আমির শাহ আলম তুহিন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহীদুল্লাহ, আলাউদ্দিন, তুহিন রেজা তুহিন প্রমুখ।
জামায়াত আমির বলেন, ছাত্র-জনতার ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে এ ঐতিহাসিক বিপ্লব সাধিত হয়েছে। কিন্তু তা নির্বিঘ্ন হয়নি বরং আমাদেরকে চড়ামূল্যে কিনতে হয়েছে। এ আন্দোলনে দু’হাজারের অধিক মানুষ রাজপথে বুকের তাজা রক্ষ ঢেলে দিয়েছেন। হাজার হাজার আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেককেই হাত-পা চোখ হারিয়েছেন। আমরা শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছি। কোনো কোনো এতিমের আমরা ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছি।
তিনি বলেন মূলত, জুলাই যোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছি। তাই দেশ ও জাতির জন্য তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেই তাদের জাতীয় বীরের মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে হবে।
তিনি জুলাই বিপ্লবের সুফল পুরোপুরি ঘরে তুলতে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাম্য, ইনসাফ ও বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আর্ত- মানবতার কল্যাণ ও দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই জামায়াতের রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আমরা দেশে এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করতে চাই, যে সমাজ বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হবে। যেখানে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। রাষ্ট্রই প্রত্যেক নাগরিকের সব সমস্যার সমাধান করবে। রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রেই আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায়-বিচার নিশ্চিত হবে। রাসুল (সা.) এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করেছিলেন যে সমাজে সানা থেকে হাজরামাউত পর্যন্ত নারীরা নির্বিঘ্নে- নিরাপদে ও সম্ভ্রম নিয়ে চলাফেরা করতে পারতেন। আমরা তেমনি এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মূলত, আল্লাহর আইনই নির্ভূল। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। কারণ, মানুষের তৈরি বিধান দিয়ে মানুষের কল্যাণ কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তিনি দেশকে কুরআন-সুন্নাহর আদর্শের কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সম্মিলিত প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।
জামায়াত আমির আরও বলেন, দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা চালানো ঐচ্ছিক কোন বিষয়টি নয়; বরং প্রত্যেক মোমিনের ওপরই অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। মূলত, আমাদের জন্য ইসলামকেই জীবনবিধান হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। আর কালামে হাকিমকে আমাদের জীবন চলার পাথেয় হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। বস্তুত, মোত্তাকীদের পথ পদর্শনের জন্যই পবিত্র কোরআন জীবন বিধান হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে। আর যারা প্রকৃত পক্ষেই মোস্তাকি তারাই শুধু কোরআন থেকে লাভবান বা উপকৃত হতে পারে। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তির জন্য আমাদের সবাইকে আল্লাহর বিধান ও রাসুল (সা.)-এর আদর্শের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সবাইকে ময়দানে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন