জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে কথা দিয়েছেন, সে কথা তাকে রাখতেই হবে। আমরা নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই চাই, এটা হতেই হবে। সে চেষ্টা আমরা সবাই মিলে করবো।
রোববার (২০ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘২৪ পরবর্তী রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচনপূর্ব সহিংসতা মোকাবিলায় আমাদের করণীয়’- শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্কুল অব লিডারশিপ, সোলো ইউএসএ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই সংলাপের আয়োজন করে।
সেলিমা রহমান বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার করার জন্যই আমরা লড়াই করছি। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা বিএনপিই দিয়েছে। এখানে বিএনপির বিরদ্ধে তো কিছু বলার নেই। বিএনপি বলেছে, আমরা এটা-এটা করবো। বিএনপি এ জন্য জনগণের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা যদি (সংস্কার) না করতে পারি, জনগণ আমাদের ছুড়ে ফেলে দিবে। সুতরাং আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ, আমরা করবো। কিন্তু সেই সংস্কার নিয়ে, নির্বাচন নিয়ে, ’২৪ এর চেতনা নিয়ে আজকে যুদ্ধ হচ্ছে। ’২৪ এর চেতনা নিয়ে আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মতো লাফালাফি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে বক্তব্যে-মিটিংয়ে তারা তাদের বাবার বয়সী, বড় ভাইয়ের বয়সী আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অশালীন বক্তব্য রাখছে। সেটা কি আমাদের সমাজের চিহ্ন? আমাদের সমাজে রীতি ছিল- বড়দের সম্মান করবে, শিক্ষকদের সম্মান করবে। সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধার একটা পরিবেশ ছিল, সেটা শেষ হয়ে গেছে। কক্সবাজারে আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ- যিনি ১৬টি বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যাকে গুম করে নিয়ে গিয়েছিল, আজকে তার বিরুদ্ধে একটা কথা বলা হলো, বলে সেটা প্রচার করা হলো এবং সেটাকে রাজনৈতিক শক্তি দেখানো হলো।
তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্ম একটা রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করছে, আমরা খুশি। এর আগে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, ’৯০-এ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সেখানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল, তারা কিন্তু ক্ষমতা ধরে রাখেনি। কিন্তু ’২৪-এ কী হলো? ’২৪-এ যারা আন্দোলন করেছেন, তাদের স্যালুট জানাই। কিন্তু একইসঙ্গে বলতে চাই, তোমাদের সঙ্গে পুরো জাতি আন্দোলনে নেমে এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যেমন ছিনতাই করে একটা ব্যবসায়িক রূপ দেয়া হয়েছিল, আজকেও মনে হচ্ছে- ’২৪ এর আন্দোলনকে ছিনতাই করে নিয়ে একটা বিশেষভাবে বলা হচ্ছে- আমরাই ’২৪ এর চেতনা।
বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, স্বৈরাচারকে ফেলে দিতে সারা দেশে যারা জীবন দিয়েছে, তাদের আমরা শ্রদ্ধা জানাবো। কিন্তু সেটাকে নিয়ে আমরা ব্যবসা করবো না। ’২৪-কে নিয়ে একচেটিয়া বলবো না যে- আমিই ’২৪ এর মুক্তিযোদ্ধা, আমিই যোদ্ধা, আর কেউ নেই। এই কথা বলবো না। এটা বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় অর্জন।
সংলাপের কী-নোট স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবি পার্টির ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ ভুঁইয়া, সোলো ইউএসএ'র ব্যাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করীম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন