বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে সরকারি ক্যাডাররা এখন ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’ ও ‘টার্গেট কিলিংয়ে’ মেতে আছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশবাসী ভোট ও পার্লামেন্ট হারিয়েছে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন হারিয়েছে, হারিয়েছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। শেষমেশ হারাতে বসেছে জীবন ও স্বাধীনতা।
তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ নাগরিক স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে, তারা বর্তমান মারাত্মক দুর্দিনের মধ্যে দিনযাপন করছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জনগণ কর্তৃক ধিক্কৃত হয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতির টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি করে সহিংসতা আর হত্যাকেই শ্রেষ্ঠ সমাধান হিসেবে মনে করছে।
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার সন্ত্রাসকে জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি বলে মনে করছে। এরা হত্যা, জখম নিষ্পন্ন করে ক’দিন পর আবার আরেকটি খুন-জখমের জন্য উন্মাদ হয়ে ওঠে। অবৈধ সরকারের দুঃশাসনের প্রোডাক্ট হচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাস তাদের মানসিক ব্যাধি।
সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীর ওপর হামলা-মামলা ও নির্যাতনের ঘটনা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এ বাংলাদেশের জন্য কি ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল, ২ লাখ মা-বোন নির্যাতন সয়েছিল? আওয়ামী সরকারের বিরোধীদের জীবন কাটে হামলা-মামলা-গুমের আতঙ্কে। নিষ্ঠুর রাজদণ্ড এখন প্রতিনিয়ত নির্মমভাবে নেমে এসেছে জনগণের পিঠে। গুম-খুন-ক্রসফায়ারের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দুদিন আগে জামালপুরের বকশীগঞ্জে মানবজমিনের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম আওয়ামী লীগের নেতা মাহমুদুল আলম বাবু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সত্য সংবাদ প্রকাশের কারণে তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছে। প্রথমে নাদিমসহ দুজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১৭ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বাবু চেয়ারম্যান। মামলাটি আদালতে খারিজ হয়ে গেলে মাহমুদুল আলম বাবু চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথায় আঘাত করার পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। একদিকে সরকারি ক্ষমতা, অন্যদিকে ঊর্ধ্বতন একজন পুলিশ কর্মকর্তার ভাই হওয়ায় বাবু চেয়ারম্যান এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। মৃত্যু যেন তার কাছে খেলা।
নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রদলের মো. রাহাদুল আমিন রবিনের ওপর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শেখ কামাল পারভেজসহ (শোয়েব) ওসমান, অনিক, শহিদুল, আবিদ, আলফাজ, জিসান ছাড়াও অজ্ঞাত ১০/১৫ জন ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা অতর্কিতে হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেছে। রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ফাস্টফুড বিক্রেতা হাফিজুল ইসলামকে প্রকাশ্যে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে যুবলীগ সন্ত্রাসীরা। তার অপরাধ সে যুবলীগের ডাকে মিছিলে অংশ নেয়নি।
মন্তব্য করুন