

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন বিএনপি থেকে ৫ বার বহিষ্কৃত ও কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান। তবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি কালবেলার এই প্রতিবেদককে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে দলটিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান। সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই যোগদান অনুষ্ঠান হয় বলে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়েছে। এ সময় জামায়াতের আমিরের সঙ্গে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম উপস্থিত ছিলেন। যোগদান অনুষ্ঠানের ছবিও পোস্টে যুক্ত করা হয়েছে।
পরে জামায়াতের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দলের অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে যোগদান করেন। ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ, দেশের স্বার্থ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবশিষ্ট জীবন অতিবাহিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি জামায়াতের নিয়মনীতি, আদর্শ, দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্যের প্রতি সর্বদা অনুগত থাকার অঙ্গীকার করেন। আখতারুজ্জামানকে আন্তরিকভাবে আলিঙ্গন করেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি আখতারুজ্জামানের দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামানের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায়। কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে টানা দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন আসনটি কেবল কটিয়াদী উপজেলা নিয়েই ছিল। এখন এই আসনে যুক্ত করা হয়েছে পাকুন্দিয়া উপজেলাও।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে এই আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পুলিশের সাবেক আইজি নৌকার নূর মোহাম্মদের কাছে হেরে যান আখতারুজ্জামান। একসময় তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপিরও সভাপতি ছিলেন।
দলীয় শৃঙ্খলা-পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আখতারুজ্জামান পঞ্চমবারের মতো বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। তবে নানা সময় সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে টকশো কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলে তিনি আলোচনায় ছিলেন। এমন অবস্থার মধ্যেই তিনি জামায়াতে যোগ দিলেন।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ‘আমি জামায়াতে যোগ দিয়েছি। তবে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেব না।’
তিনি বলেন, “আমার একটি আত্মপরিচয় দরকার। তা ছাড়া তারেক রহমান বলেছেন, ‘জামায়াত লাখ লাখ লোক মেরেছে’ তার এই বক্তব্যের জন্য আমি জামায়াতে যোগ দিয়েছি। তারেক রহমান ১৯৯১ সালে, ১৯৯৬ সালে এবং ২০০১ সালে জামায়াতের বিরুদ্ধে কেন বলেনি? তখন জামায়াতকে ব্যবহার করতে খুব ভালো লেগেছিল? অতএব একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই বা জাতিকে বোঝাতে চাই যে, জামায়াত ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো পদবি চাইনি। শুধু সংগঠনে যুক্ত হতে চাই।’
মন্তব্য করুন