

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ প্লাজার দক্ষিণ পাশে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ভিড় বাড়ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি আরও বেশি হচ্ছে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এই দৃশ্য দেখা যায়। জানাজা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে।
বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের সুবিধার্থে কোনো গাড়ি মিরপুর সড়ক ব্যবহার করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে না যাওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের আড়ংয়ের পাশের প্রবেশ পথ সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিকল্প হিসেবে কয়েকটি পথ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া খামারবাড়ি ও বিজয় সরণি এলাকার পথ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে, যা দিয়ে মানুষ জানাজায় অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা জানাজায় উপস্থিত হতে আসছেন। কেউ কারও হাতে দেশের ও দলের পতাকা নিয়ে এসেছেন, আবার কারও কারও হাতে কালো পতাকা দেখা গেছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মরদেহ গুলশান থেকে জানাজার উদ্দেশে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নেওয়া হয়েছে। তার মরদেহ বহনকারী জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িটি সংসদ ভবন এলাকা নেওয়া হয়। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িবহর তারেক রহমানের গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসা থেকে বের হয়। পৌনে ১১টার পর গাড়িবহর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছায়।
গাড়িবহরে লাল-সবুজ রঙের একটি বাসও রয়েছে। তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান, ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা জানাজাস্থলে আছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার স্বজনরাও এই গাড়িবহরে রয়েছেন।
এর আগে, বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার পর শেষবারের মতো খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় নেওয়া হয়। তার মরদেহ দীর্ঘদিনের বাসভবন ফিরোজায় নেওয়ার কথা ছিল। পরে গাড়িটি তারেক রহমানের গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে খালেদা জিয়ার স্বজন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান।
বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বুধবার বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা পড়াবেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। জানাজা আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়াকে তার স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
এদিকে জানাজায় অংশ নিতে মঙ্গলবার রাত থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীর ভিড় বাড়তে থাকে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। শেষবারের মতো খালেদা জিয়াকে একনজর দেখার আশায় তারা গণপরিবহন, ট্রেন, লঞ্চ ও ব্যক্তিগত যানবাহনে করে রাজধানীতে আসছেন।
জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া মারা যান। তার মৃত্যুতে বুধবার থেকে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি) পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। এ ছাড়া বুধবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন