গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার আবারও একটি একতরফা, তামাশার ভোটের আয়োজন করেছে। ভোটের সব হিসাব-নিকাশ অগ্রিম ঠিক করা হয়েছে। এখানে ৭ জানুয়ারি জনগণের ভোট লাগবে না। আগেই ঠিক করা হয়েছে কারা কারা জিতবে, আর কে হবেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ কল্পিত প্রতিযোগিতা দেখাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মারামারি করছে। প্রলোভন-হুমকি দিয়ে যাদের প্রার্থী করা হয়েছিল, তারাও আর ভোটের মাঠে নেই।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘একতরফা’ ভোট বর্জনের আহ্বানে গণতন্ত্র মঞ্চের গণসংযোগপূর্ব সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন এবং নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। সমাবেশ থেকে ভোট বর্জনের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে ঘোষণা দিয়ে নেতারা বলেন, যতই পুলিশি বাধা আসুক- জনগণকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ তাদের ধারাবাহিক লড়াই চালিয়ে যাবে। সভা-সমাবেশের ওপর নির্বাচন কমিশনের যতই নিষেধাজ্ঞা থাকুক, জনগণ দেশে আরেকটা ভুয়া নির্বাচন করতে দিবে না।
সরকারের উদ্দেশে তারা বলেন, এখনো সময় আছে সব বিরোধী পক্ষের সাথে আলোচনায় বসে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের উদ্যোগ নিন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করে সব রাজনৈতিক দলকে সাথে নিয়ে পুনরায় তপশিল ঘোষণা করুন।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এবারের একতরফা নির্বাচনে ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’কেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। জনগণ জানে এদের উন্নয়ন মানে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার এবং বিদেশে বেগমপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়া তৈরি। এদের উন্নয়ন মানে হলো আসলে কোটি কোটি মানুষের হাহাকার। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, একটা দল তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য পুরো দেশকে ভয়ংকর হুমকির মুখোমুখি করছে। এই সরকার দেশকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সংকটসহ আন্তর্জাতিক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে পরাশক্তিগুলোর ক্রীড়াক্ষেত্রে পরিণত করছে।
নেতারা জানান, গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে আগামীকাল শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ এবং মালিবাগ অভিমুখে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা জানান, সমাবেশ শেষে পুলিশি বাধার মুখে গণসংযোগের উদ্দেশ্যে শুরু হওয়া মিছিল পণ্ড হয়ে যায়।
এদিকে ভোট বর্জনের আহ্বান ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে পল্টন ও বিজয়নগর এলাকায় পৃথকভাবে ১২ দলীয় জোট, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম (মন্টু)-বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি) ও লেবার পার্টি গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে।
মন্তব্য করুন