সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩, ০৪:৩৩ পিএম
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৩, ০৫:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
‘ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে দুই সিটির মেয়র ব্যর্থ’

বিএনপির চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা

শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীরা। ছবি : কালবেলা
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীরা। ছবি : কালবেলা

রাজধানীতে ডেঙ্গুর বিস্তারে দুই সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়রের চরম ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বিএনপি। একইসঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের পাশে থাকাসহ জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য চার দফা কর্মসূচি নিয়েছে দলটি।

শুক্রবার (২১ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনে গত নির্বাচনে ধানের শীষের দুই মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও তাবিথ আউয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে রাজধানীর ডেঙ্গু বিস্তারে ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের বিদেশে সফর ও ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের চাকরির মেয়াদ আবারও বৃদ্ধি, রাজধানীতে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি সংকটসহ নাগরিকদের সেবা না পাওয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরে সিটি করপোরেশনের মেয়রদ্বয়ের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এই সংবাদ সম্মেলনে।

এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্যসচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ও বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক ডা. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

‘ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসায় কর্মসূচি’

‘ব্লাড ড্রাইভ কর্মসূচি’র মধ্যমে দলের নেতাকর্মীরা রক্ত দেবে, অন্যকেও রক্ত দিতে উৎসাহিত করা হবে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে সেন্ট্রালাইজড ‘ব্লাড ইনফরমেশন ডিপোজেটারি’ ওয়েবসাইট চালু করা হবে। যতদিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি থাকবে এই সেবা চালু থাকবে। এর মাধ্যমে যার যে গ্রুপের রক্ত জরুরি প্রয়োজন তা দ্রুত পাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে এবং ডেঙ্গু রোগ থেকে মুক্ত হতে ওয়ার্ড পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ এবং পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রচার করা হবে। পাশাপাশি এডিস মশা উৎপাদনের বড় ক্ষেত্র সরকারি স্থাপনা ও নির্মাণাধীন বিল্ডিংসমূহ, সেগুলোকে চিহ্নিত করে তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে এলাকাবাসীকে নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, ডেঙ্গু থেকে মুক্ত হতে শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখা, এডিসের লার্ভা যেখানে জন্ম হয় সেই জায়গাগুলো নষ্ট করে দেওয়া এবং বিভিন্ন জায়গায় জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। আমরা দেখছি যে, প্রিভেন্টিভ পার্টে কোনো কাজই করা হচ্ছে না। বিভিন্ন পাইপ, পরিত্যক্ত টায়ার, পুরোনো গাড়ি, মেশিনপত্র কোনো কিছুই কিন্তু ভাঙা হচ্ছে না। অথচ সেখানে পানি জমে জমে অন্ধকারের ভেতরে লার্ভাকে আরও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে গ্রো করার জন্য। আমি বলতে পারি, ‘তামাশা‘র অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। হাঁস ছাড়া হয়েছে বিভিন্ন লেকে, মাছ ছাড়া হয়েছে, ব্যাঙ ছাড়া হয়েছে এবং দেখানোর জন্য কিছু লেক বা খালের পাশে কিছু ঘাস কাটা হয়েছে। মশক নিধনে কার্যক্রম চলছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। ব্যবহার করা হচ্ছে অকার্যকর, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, গত ২০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমানে মেয়র পদে চেয়ার দখল করে যারা আসীন রয়েছেন তাদের ব্যর্থতার কারণে আজকে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাদের জবাবদিহিতার অভাবের কারণে, জনগণের কাছে তাদের জবাব দিতে হয় না বলেই আজকে এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে। সার্বিকভাবে দূষণ রোধ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা আজকে ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য অন্যতম একটি কারণ। ফলে অতিমাত্রায় পরিবেশ দূষণ ঘটেছে এবং ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে অধিকতর বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত বর্জ্য নিষ্কাশন না করার ফলে ময়লা-আর্বজনার মধ্যে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লাগামহীন বিস্তার ঘটেছে। শুধু হাতেগোনা কিছু এলাকায় তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করেছেন যেখানে উচ্চবিত্তরা থাকেন। এর বাইরে বাকি ঢাকা সিটিতে তাদের নজর নাই। এমনকি লার্ভা নিধনে কীটনাশক কিনতে সীমাহীন দুর্নীতি করে সেখানে কেরোসিন মেশানো হচ্ছে। তাতে কার্যকর কোনো ফল মিলছে না।

তিনি আরও বলেন, আসলে মেয়র পদটাকে নগরপিতা বলা হয় যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, যারা এই পদে বসে আছেন তারা এর গুরুত্ব বুঝে না, নগরপিতার যে ভূমিকা সেটা রাখা তো দূরের কথা বরঞ্চ তারা স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে সিটি করপোরেশন পরিচালনা করছে। তারা বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে নিজেদের মনগড়া কিছু লোক দেখানো কার্যক্রম করছে। এখানে ড্রোন উড়ানো হয়েছে, আরও অন্যান্য উদ্ভট কিছু কর্মসূচি দিয়েছে... এটা জনগণ ভাঁওতাবাজি বলে মনে করছে। দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ‘আয়তন ও জনসংখ্যা অনুপাতে পর্যাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ’ নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইশরাক।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্ত জাকের

আবারও ভারতের কাছে কুপোকাত পাকিস্তান

সাবেক যুবদল নেতার উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার 

আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১০

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

১১

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

১২

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

১৩

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

১৪

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

১৫

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা সংশোধন

১৬

কর্মবিরতিতে ভেঙে পড়েছে টিকাদান কর্মসূচি

১৭

আ.লীগ নেতাকে ছিনতাই, ২২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১৮

রাজশাহীতে মা-ছেলেসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

১৯

নীতি-আদর্শের পরিবর্তন করতে পারলেই শান্তি আসবে : ফয়জুল করীম

২০
X