শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ০১:১৯ এএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অমুসলিমদের কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে? জেনে নিন কোরআন-হাদিস কী বলে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কোরবানি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব এবং ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোর একটি। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের পাশাপাশি গরিব-দুঃখী ও প্রতিবেশীদের সাহায্য করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীদের যুগেই কোরবানির প্রচলন ছিল। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং ইসলামের অন্যতম প্রতীকী বিধান- ‘শাআইরে ইসলাম’-এর অন্তর্ভুক্ত। তাই মুসলমানদের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম।

তবে কোরবানি নিয়ে একটি প্রশ্ন অনেকের মনে ঘোরে- অমুসলিমদের কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে কি না? বিশেষত বর্তমান সমাজে যেখানে মুসলমানদের প্রতিবেশী হিসেবে বহু অমুসলিম বসবাস করেন, সেখানে এই প্রশ্নটি বাস্তবতা বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক মুসলমান মনে করেন, কোরবানির মাংস কেবল মুসলমানদের মধ্যেই বণ্টনযোগ্য। তবে এই ধারণাটি সঠিক নয়। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে অমুসলিমদের- বিশেষ করে প্রতিবেশী, সহকর্মী কিংবা গরিবদের- কুরবানির মাংস দেওয়া সম্পূর্ণ বৈধ ও গ্রহণযোগ্য।

সাহাবিদের জীবনে এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে তারা অমুসলিম প্রতিবেশীদের কোরবানির মাংস দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে- আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর বাড়িতে একটি বকরি জবাই করা হলে, তিনি বাড়ি ফিরে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে এই গোশত পাঠিয়েছ?

তিনি একাধিকবার এটি জিজ্ঞাসা করেন এবং বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি- জিবরাইল (আ.) আমাকে বারবার প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে উপদেশ দিতেন, এমনকি আমি ধারণা করতাম যে প্রতিবেশীকেও উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেওয়া হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪৩)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, প্রতিবেশী মুসলিম না হলেও তার হক আছে এবং তাকে সদয়তা ও আপ্যায়ন দেওয়া ইসলামের শিক্ষা।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন : দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন। - (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত ৮)

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, অমুসলিম যদি বৈরী না হয়, তবে তার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, দান-খয়রাত এবং সামাজিক সৌহার্দ্য গঠন ইসলামসম্মত।

ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া জায়েজ (বৈধ)। বিশেষত যদি তারা প্রতিবেশী হয় কিংবা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তবে তাদের হক রয়েছে। কুরবানির মাধ্যমে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়, তেমনি মানবিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহানুভূতি বৃদ্ধির সুযোগও তৈরি হয়।

অতএব, কুরবানির মাংস অমুসলিম প্রতিবেশী বা বন্ধুদের উপহার দেওয়া ইসলামসম্মত ও মানবিক কাজ। এটি ইসলামের সহনশীলতা ও সৌহার্দ্যেরই প্রতিফলন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারেক রহমানের পক্ষে দুস্থদের ঈদ উপহার দিলেন সোহেল

‘সাংবাদিকের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে’

আজ স্বর্ণ কিনলে গুনতে হবে বাড়তি টাকা

উদ্বোধনের আগেই ভেঙে যাওয়া সেই যুদ্ধজাহাজ উদ্ধার

ভুল বোঝাবুঝির জেরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা?

চাকরির অনিশ্চয়তায় খুবির নিরাপত্তা কর্মীরা, বঞ্চিত মৌলিক সুবিধা থেকে

‘তাণ্ডব’ অসম্ভব ভালো নির্মাণের সিনেমা : শাকিব খান

সময়মতো লঞ্চ না ছাড়লে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আরও একটি ম্যাচ জয়ের পর যা বললেন স্কালোনি

বিপদে পড়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রকে কিমের কাছে পাঠালেন পুতিন

১০

চাপ থাকলেও যানজট নেই উত্তরের মহাসড়কে

১১

এখন তো জাতীয় ভিলেনে পরিণত হয়ে গেছি : ইশরাক

১২

‘যে ট্রেন আমার মেয়ের এত পছন্দ, সেই ট্রেনই তাকে কেড়ে নিল’

১৩

বেঙ্গালুরুতে পদদলিত হয়ে ১১ মৃত্যু : আরসিবির মার্কেটিং প্রধান গ্রেপ্তার

১৪

গুরুতর অপরাধের ফাইলে ট্রাম্পের নাম থাকার অভিযোগ ইলন মাস্কের

১৫

ইলন মাস্ককে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের পর টেসলার শেয়ারে ধস

১৬

২০ বছর সাধনার পর বাদশাহর মেহমান হয়ে কাবায় এক বৃদ্ধ

১৭

ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই : ডিএমপি কমিশনার

১৮

কোরবানির মাংস পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যাবে?

১৯

সাভারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম গ্রেপ্তার

২০
X