কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ০১:১৯ এএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অমুসলিমদের কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে? জেনে নিন কোরআন-হাদিস কী বলে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কোরবানি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব এবং ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোর একটি। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের পাশাপাশি গরিব-দুঃখী ও প্রতিবেশীদের সাহায্য করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীদের যুগেই কোরবানির প্রচলন ছিল। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং ইসলামের অন্যতম প্রতীকী বিধান- ‘শাআইরে ইসলাম’-এর অন্তর্ভুক্ত। তাই মুসলমানদের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম।

তবে কোরবানি নিয়ে একটি প্রশ্ন অনেকের মনে ঘোরে- অমুসলিমদের কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে কি না? বিশেষত বর্তমান সমাজে যেখানে মুসলমানদের প্রতিবেশী হিসেবে বহু অমুসলিম বসবাস করেন, সেখানে এই প্রশ্নটি বাস্তবতা বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক মুসলমান মনে করেন, কোরবানির মাংস কেবল মুসলমানদের মধ্যেই বণ্টনযোগ্য। তবে এই ধারণাটি সঠিক নয়। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে অমুসলিমদের- বিশেষ করে প্রতিবেশী, সহকর্মী কিংবা গরিবদের- কুরবানির মাংস দেওয়া সম্পূর্ণ বৈধ ও গ্রহণযোগ্য।

সাহাবিদের জীবনে এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে তারা অমুসলিম প্রতিবেশীদের কোরবানির মাংস দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে- আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর বাড়িতে একটি বকরি জবাই করা হলে, তিনি বাড়ি ফিরে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে এই গোশত পাঠিয়েছ?

তিনি একাধিকবার এটি জিজ্ঞাসা করেন এবং বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি- জিবরাইল (আ.) আমাকে বারবার প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে উপদেশ দিতেন, এমনকি আমি ধারণা করতাম যে প্রতিবেশীকেও উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেওয়া হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪৩)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, প্রতিবেশী মুসলিম না হলেও তার হক আছে এবং তাকে সদয়তা ও আপ্যায়ন দেওয়া ইসলামের শিক্ষা।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন : দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন। - (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত ৮)

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, অমুসলিম যদি বৈরী না হয়, তবে তার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, দান-খয়রাত এবং সামাজিক সৌহার্দ্য গঠন ইসলামসম্মত।

ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া জায়েজ (বৈধ)। বিশেষত যদি তারা প্রতিবেশী হয় কিংবা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তবে তাদের হক রয়েছে। কুরবানির মাধ্যমে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়, তেমনি মানবিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহানুভূতি বৃদ্ধির সুযোগও তৈরি হয়।

অতএব, কুরবানির মাংস অমুসলিম প্রতিবেশী বা বন্ধুদের উপহার দেওয়া ইসলামসম্মত ও মানবিক কাজ। এটি ইসলামের সহনশীলতা ও সৌহার্দ্যেরই প্রতিফলন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বাস্থ্য পরামর্শ / রান্নায় সরিষার তেলে ঝুঁকি ও অসংক্রামক রোগ

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আবারো দুর্ঘটনা, নিহত আরও ৩

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে ৫৮% মার্কিনি : রয়েটার্স

স্পেনের বাইরে লা লিগার ম্যাচ খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাল ফুটবলাররা

দুবাইয়ে যাওয়ার ৪ মাস পরই ৩ কোটির লটারি জিতলেন প্রবাসী

এনজো ফার্নান্দেজের মুখে রিয়াল মাদ্রিদের নাম, বাড়ছে গুঞ্জন

কেশবপুরে নারী সমাবেশ/ / ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি

সাভারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের দাওয়াতি মাসের শুভ উদ্বোধন

তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন, নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীও হবেন : এ্যানি

দলবদলের বাজারে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর রেকর্ড ভাঙা খরচ

১০

ধর্মগড় সীমান্তে বিজিবির হাতে আটক চার বাংলাদেশি

১১

হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে মোদিকে ওয়েইসির প্রশ্ন

১২

জাকসুতে প্যানেল দ্বন্দ্ব, পদত্যাগ করে বাগছাস নেতার মিষ্টি বিতরণ

১৩

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা আন্তর্জাতিক মানের করতে চাই : বেবিচক চেয়ারম্যান

১৪

‘আ. লীগ বিদ্যুৎ খাতে চুরির লাইসেন্স দিয়েছিল’

১৫

আ.লীগ নেত্রী রুনু গ্রেপ্তার

১৬

ইসির ইউটিউব চ্যানেল চালু, মিলবে যেসব তথ্য

১৭

শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তারের দাবি শিক্ষার্থী

১৮

চার বিভাগে ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি, পাহাড়ধসের আশঙ্কা

১৯

ভোলায় পাঁচ দিন ২০ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

২০
X