বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ০১:১৯ এএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অমুসলিমদের কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে? জেনে নিন কোরআন-হাদিস কী বলে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কোরবানি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব এবং ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোর একটি। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের পাশাপাশি গরিব-দুঃখী ও প্রতিবেশীদের সাহায্য করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীদের যুগেই কোরবানির প্রচলন ছিল। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং ইসলামের অন্যতম প্রতীকী বিধান- ‘শাআইরে ইসলাম’-এর অন্তর্ভুক্ত। তাই মুসলমানদের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম।

তবে কোরবানি নিয়ে একটি প্রশ্ন অনেকের মনে ঘোরে- অমুসলিমদের কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে কি না? বিশেষত বর্তমান সমাজে যেখানে মুসলমানদের প্রতিবেশী হিসেবে বহু অমুসলিম বসবাস করেন, সেখানে এই প্রশ্নটি বাস্তবতা বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক মুসলমান মনে করেন, কোরবানির মাংস কেবল মুসলমানদের মধ্যেই বণ্টনযোগ্য। তবে এই ধারণাটি সঠিক নয়। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে অমুসলিমদের- বিশেষ করে প্রতিবেশী, সহকর্মী কিংবা গরিবদের- কুরবানির মাংস দেওয়া সম্পূর্ণ বৈধ ও গ্রহণযোগ্য।

সাহাবিদের জীবনে এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে তারা অমুসলিম প্রতিবেশীদের কোরবানির মাংস দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে- আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর বাড়িতে একটি বকরি জবাই করা হলে, তিনি বাড়ি ফিরে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে এই গোশত পাঠিয়েছ?

তিনি একাধিকবার এটি জিজ্ঞাসা করেন এবং বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি- জিবরাইল (আ.) আমাকে বারবার প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে উপদেশ দিতেন, এমনকি আমি ধারণা করতাম যে প্রতিবেশীকেও উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেওয়া হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪৩)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, প্রতিবেশী মুসলিম না হলেও তার হক আছে এবং তাকে সদয়তা ও আপ্যায়ন দেওয়া ইসলামের শিক্ষা।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন : দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন। - (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত ৮)

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, অমুসলিম যদি বৈরী না হয়, তবে তার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, দান-খয়রাত এবং সামাজিক সৌহার্দ্য গঠন ইসলামসম্মত।

ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির মাংস অমুসলিমদের দেওয়া জায়েজ (বৈধ)। বিশেষত যদি তারা প্রতিবেশী হয় কিংবা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তবে তাদের হক রয়েছে। কুরবানির মাধ্যমে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়, তেমনি মানবিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহানুভূতি বৃদ্ধির সুযোগও তৈরি হয়।

অতএব, কুরবানির মাংস অমুসলিম প্রতিবেশী বা বন্ধুদের উপহার দেওয়া ইসলামসম্মত ও মানবিক কাজ। এটি ইসলামের সহনশীলতা ও সৌহার্দ্যেরই প্রতিফলন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতায় শাবনূরের আবেগঘন বার্তা

যুদ্ধের উসকানি দিয়ে শান্তির প্রতীক হওয়া যায় না, ট্রাম্পকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাবার সঙ্গে আলোর শেষ কথা—আমরা আটকে গেছি

লাইভে এসে সংসদ ভেঙে দিলেন পালিয়ে যাওয়া মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড : দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থীকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

মেসি নন, নতুনদের নিয়েই পুয়ের্তো রিকোর মুখোমুখি আর্জেন্টিনা

বিএনপি কোনো দলের বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় না : কফিল উদ্দিন 

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান হাসপাতালে ভর্তি

পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে : পরওয়ার

১০

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে : লায়ন ফারুক

১১

ভারতের হারে এশিয়ান কাপ খেলার স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের

১২

সাবেক স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার

১৩

পর্তুগালসহ যেসব দল আজ নিশ্চিত করতে পারে বিশ্বকাপের টিকিট!

১৪

এক দিনের ব্যবধানে দেশে স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল

১৫

সুস্থ থাকতে খেলাধুলার বিকল্প নেই : মেয়র ডা. শাহাদাত

১৬

ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নেওয়ায় প্রতিবন্ধীর প্রতিবাদ

১৭

হোয়াইটওয়াশ এড়াতে মিরাজদের সামনে বিশাল লক্ষ্য

১৮

চাকসুতে এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

১৯

গুমের শিকার পরিবারগুলোর মানববন্ধন / স্বজনদের ফেরত দিন, না পারলে জড়িতদের বিচার করুন

২০
X