ইংল্যান্ডের নিচের সারির ঘরোয়া ক্রিকেটে একটি অদ্ভুত ও ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। ইংল্যান্ডের নবম সারির এক ক্লাব ম্যাচে, বাবা ইয়ান বেস্টউইক এবং তার ছেলে থমাস বেস্টউইক একসঙ্গে ২০৮টি বল খেলেছেন, তবে তারা কত রান করেছেন শুনলে অবাক হবেন। প্রায় ৩৫ ওভার খেলে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৪ রান করেন।
অদ্ভুত এ ঘটনাটি ঘটেছে ডার্বিশায়ার ক্রিকেট লিগের ডিভিশন নাইনের ম্যাচে, যেখানে ডার্লি অ্যাবে ক্রিকেট ক্লাবের ৪র্থ একাদশ এবং মিকলওভার ৩য় একাদশের মুখোমুখি হয়। ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকসের নেতৃত্বে চলা ইংল্যান্ডের আক্রমণাত্মক ‘বাজবল’ শৈলীর সম্পূর্ণ বিপরীত কৌশল দেখা গেল এ ম্যাচে।
ডার্লি অ্যাবে দলের ওপেনার ইয়ান বেস্টউইক ১৩৭টি বল খেলে একটিও রান করতে ব্যর্থ হন। তার ছেলে, থমাস, ৭১টি বল খেলে মাত্র ৪ রান করেন, যার মধ্যে ৭০টি শট ছিল ডট বল এবং একটিই ছিল বাউন্ডারি। এই বাবা-ছেলের জুটি মূলত উইকেট বাঁচানোর জন্যই ব্যাটিং করে যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল অভিজ্ঞতা না থাকায় কোনো ঝুঁকি না নিয়ে উইকেট বাঁচানো।
অপরদিকে, মিকলওভার ৩য় একাদশ তাদের ইনিংসে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে মাত্র ৩৫ ওভারে ২৭১/৪ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে। তাদের ওপেনার ম্যাক্স থম্পসন মাত্র ১২৮ বল থেকে ১৮৬ রান করেন, যার মধ্যে ১৭টি চার ও ১৪টি ছক্কা ছিল। এটি স্টাইল অনুযায়ী একটি বাজবল শৈলী।
কিন্তু ডার্লি অ্যাবে ৪র্থ একাদশের ব্যাটাররা সম্পূর্ণ ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। ৪৫ ওভারে তারা মাত্র ২১ রান সংগ্রহ করে এবং ৪ উইকেট হারায়। তাদের ইনিংসে মাত্র দুজন ব্যাটার রান করতে সক্ষম হন, তবে কেউই দুই অঙ্কের ঘর পার করতে পারেননি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল অতিরিক্ত রান।
ম্যাচটি ড্র হলেও, ডার্লি অ্যাবে দলের ড্রেসিং রুমে ছিল বিজয়ের উদযাপন। ইয়ান বেস্টউইক ম্যাচের পর বলেন, ‘এটা যেন আমরা কোনো ট্রফি জিতেছি। আমাদের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ অসাধারণ ছিল। আমরা তিন ঘণ্টা ধরে মাঠে চামড়ার বলের পেছনে দৌড়েছি। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ড্র করার পর মনে হলো যেন আমরা কোনো কাপ জিতেছি।’
ইয়ান আরও বলেন, ‘যদিও আমরা কিছু রান করতে পারিনি, তবুও এটি ছিল একটি দারুণ অভিজ্ঞতা। শেষের দিকে আমার মনে হচ্ছিল, আমি কোনো রান না করেই ইনিংস শেষ করব।’
এই অদ্ভুত ও ধীরগতির ইনিংসটি ইতোমধ্যেই ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন তুলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এটি শুধু ইংল্যান্ডে নয়, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান এবং কাতারসহ বিভিন্ন দেশেও আলোচিত হয়েছে।
যদিও ম্যাচটি ড্র হয়েছে, মিকলওভার ৩য় একাদশ নিয়ম অনুযায়ী বেশি পয়েন্ট পেয়েছে। তবে ইয়ান ও থমাস বেস্টউইকের ব্লকাথন (কোনো রান না করে বল খেলা) স্থানীয় ক্রিকেটে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন