নাজমুল হোসেন শান্তর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে পথচলাটা সুখকর ছিল না। সম্ভাবনাময় ব্যাটার হিসেবে জাতীয় দলে জায়গা পেলেও নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না এই ব্যাটার। তবে গত কয়েক মাস দারুণ ধারাবাহিক তিনি। এই ধারাবাহিকতার পুরস্কার হিসেবে নতুন এক প্রথমের সাক্ষী হতে যাচ্ছেন শান্ত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে শান্তর।
শান্তর মাঝে আগেই খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল নেতৃত্বগুণ। ঘরোয়া ক্রিকেটে নেতৃত্বের সামর্থ্যও তিনি দেখিয়েছেন একাধিকবার। এবার এই ব্যাটার বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। সিরিজে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় এমন দায়িত্ব পেলেও সেটা তার কাছে প্রবল আনন্দের। যাতে মিশে আছে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার গর্ব।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে বিশ্রামে ছিলেন এশিয়া কাপে চোটে পড়া শান্ত। এই সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান না খেলায় প্রথম দুই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন তার ডেপুটি লিটন দাস।
আর লিটনও বিশ্রাম পাচ্ছেন শেষ ম্যাচে। সাকিব-লিটন কেউ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই শান্তকেই বেছে নেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের ১৬তম ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মঙ্গলবার টস করতে নামবেন এই ব্যাটার।
আজ দলের প্রতিনিধি হয়ে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে এই মুহূর্তটা যে কত গর্বের সেই কথাটাই জানালেন শান্ত। বললেন তিনি উপভোগ করছেন বিষয়টা, ‘আলহামদুল্লিলাহ! আমার মনে হয় যে আজ ক্রিকেট প্লেয়ার হিসেবে আমার জন্য অনেক প্রাউডের ব্যাপার। সাথে সাথে আমার ফ্যামিলি মেম্বার তাদের জন্য অনেক প্রাউডের ব্যাপার। সো আলহামদুল্লিলাহ, ক্রিকেট বোর্ড এই অপরচুনিটিটা তৈরি করে দিয়েছেন খুবই এক্সসাইটেড এবং এনজয় করব ইনশাআল্লাহ কালকে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শান্তর পথচলাটা ৬ বছরের। এই সময়ে মধ্যে তাকে নানা বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। বাতিলের খাতায় পড়েছেন একাধিকবার। শান্ত বিসিবির একটি ‘ভুল বিনিয়োগ’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন অনেকে। তবে শেষ এক বছর দৃশ্যপট বদলে গেছে। তিনি হয়ে উঠেছেন এখন তারকা, দলের অন্যতম ভরসাও।
সেই পথচলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে শান্ত বলেন, ‘জার্নির কথা যেটা বলি, শুরু থেকে খুবই ভালো যাচ্ছে। এখনও অনেক দূর যাওয়া বাকি। এনজয় করেছি। প্রত্যেকটা সময় এনজয় করেছি। ভালো সময় বলেন বা খারাপ সময় বলেন। প্রত্যেকটা সময় এনজয় করার চেষ্টা করেছি। এবং ভবিষ্যতে যদি ওই অপরচুনিটি আসে দলের দেশের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার অবশ্যই ওইটা করার চেষ্টা করব। এবং এটা আসলে আমার মনে হয় প্রত্যেকটা ক্রিকেটারেরই ড্রিম। যে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে। এটা আমার এখন পর্যন্ত আসছে। ভবিষ্যতে যদি আবার অপরচুনিটি আসে, আবার ভালোভাবে করার চেষ্টা করব।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের শঙ্কার মুখে অধিনাকয়ত্ব পেয়েছেন এই ব্যাপারটিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাওয়া হয় তার কাছে। টাইগার এই ওপেনার বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ না আমার কাছে মনে হয় আনন্দের। খুব ভালো লাগছে এমন অপরচুনিটি এবং এমন অবস্থায় আমাদের টিম আছে সামনে ওয়ার্ল্ড কাপ। সব মিলায়া আমার কাছে মনে হয় যদি আমরা এই জায়গায় ব্যক্তিগতভাবে আমি যদি ভালোভাবে শেষ করতে পারি ম্যাচটা আমার ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের টিম একটা ভালো অবস্থায় থাকবে। ২০০৮ এ কী হয়েছিল, সেটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার অপশন নাই। মেইন যে জিনিসটা হলো যে, কীভাবে কালকের ম্যাচটা আমরা খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারি।’
আগামীকাল দুপুর দুইটায় সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দল।
মন্তব্য করুন