বিরাট কোহলি ছন্দে থাকলে আড়াইশর সামান্য বেশি রান তাড়া করা যে পানির মতো সহজ তা আরও একবার প্রমাণ হলো। পুনেতে ১০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের ৪৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ছক্কা মেরে। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে সেঞ্চুরি করতে পারা তার জন্য বিশেষ আনন্দের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন কোহলি।
ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি শচিন টেন্ডুলকারের। ৪৯ সেঞ্চুরি নিয়ে তিনি সবার ওপরে আছেন। এই বিশ্বকাপে লিটল মাস্টারকে ছুয়ে তাকে পেছনে ফেলার সুযোগ আছে কোহলির সামনে। যদিও তিনি সেসব নিয়ে ভাবছেন না। খেলা উপভোগ করছেন জানিয়ে কোহলি বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমি কয়েকটি হাফ সেঞ্চুরি করেছি। সেগুলো সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারছিলাম না। সে কারণে চেয়েছিল শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচটা শেষ করতে। উইকেট ছিল দারুণ ব্যাটিং সহায়ক। এটা দেখে নিজের খেলা খেলতে থাকি, গ্যাপে শট খেলার সিদ্ধান্ত নিই।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে পুনেতে সেঞ্চুরি নাও পেতে পারতেন কোহলি। কিন্তু লোকেশ রাহুল তাকে সেঞ্চুরি পেতে সাহায্য করেন। রাহুল যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭৯ রান। রাহুল বলেন, ‘আমি যখন ব্যাট করতে নামি, তখন বেশি কিছু করার ছিল না। প্রথমে ভেবেছিলাম দ্রুত ম্যাচ শেষ করব। কিন্তু যখন ৩০ রান বাকি, তখন দেখি বিরাটের সেঞ্চুরি করার সুযোগ রয়েছে। আমি ওকে বলি সেঞ্চুরির জন্য খেলতে।’
শেষ দুই ওভারে কোহলি সিঙ্গলস না নিয়ে বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরির চেষ্টা করছেন। এটা নিয়ে রাহুল বলেন, ‘আমি সিঙ্গলস নিতে চাচ্ছিলাম না। বিরাট বলে, লোকে বলবে আমি সেঞ্চুরির জন্য খেলছি। কিন্তু আমি বলি, দলের জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে। সেঞ্চুরি করতে গেলে দলের অসুবিধা হবে না।’
বাংলাদেশের বেঁধে দেওয়ার ২৫৬ রানের টার্গেট তারা করতে নেমে দারুণ ওপেনিং জুটি গড়েন শুভমান গিল এবং রোহিত শর্মা। ওপেনিং জুটির প্রশংসা করেন কোহলি। ম্যাাচ সেরার পুরস্কার জেতার পর রবীন্দ্র জাদেজার দারুণ বোলিংয়ের কথাও মজার ছলে মনে করেছেন কোহলি। তিনি বলেন, ‘সরি জাড্ডু তোমার ম্যাচের সেরার পুরস্কার ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য। আমি চেয়েছিলাম বড় রান করতে। এই বিশ্বকাপে হাফ সেঞ্চুরি করেছি। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ম্যাচ শেষ করে আসতে। সেই লক্ষ্য নিয়েই খেলছিলাম। শুভমানকে বলেছিলাম- শুরুটা ভালো হয়েছে। এমন শুরু হলে মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে অনেকগুলো মাইলফলক ছুঁয়েছেন কোহলি। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫১০টি ম্যাচের ৫৬৬টি ইনিংসে কোহলির সংগ্রহ ছিল ২৫৯২৩ রান। অর্থাৎ, ২৬ হাজার রান পূর্ণ করতে তার প্রয়োজন ছিল ৭৭ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৩ রানের ইনিংস খেলে সেই মাইলফলক ছুঁয়েছেন কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৬ হাজার রান কোহলির আগে করেছেন শচিনসহ তিনজন। ৬৬৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে শচিনের সংগ্রহ ৩৪,৩৫৭ রান। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা ৫৯৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ২৮,০১৬ রান করে। তৃতীয় স্থানে থাকা রিকি পন্টিং ৫৬০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে করেছেন ২৭,৪৮৩ রান। এই তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছেন বিরাট কোহলি। ৫১১টি ম্যাচে কোহলির রান হল ২৬,০২৬।
মন্তব্য করুন