বৃহস্পতিবারের ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ যদি হঠাৎ করে কেউ দেখতে শুরু করে তাহলে ভাবতে বাধ্য হবে যে সে দেড় মাস আগে হয়ে যাওয়া এশিয়া কাপের ফাইনালের হাইলাইটস দেখছে কি না? সেপ্টেম্বরের ১৭ আর নভেম্বর ২ শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের চাওয়া থাকবে যত দ্রুত সম্ভব এই দুটি দিন ভুলে যাওয়া। দেড় মাসের ব্যবধানে দুবারের দেখায় দুইবারই ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে রীতিমতো বিধ্বস্ত লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপ। কলম্বো ৫০ আর মুম্বাইয়ে ৫৫ রানে অলআউট হয়েছে লঙ্কান ক্রিকেট দল। অবশ্য গতকালকের শ্রীলঙ্কার এই অসহায়ত্বে খানিকটা স্বস্তি পাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ভারতের কাছে শ্রীলঙ্কার এই নাস্তানাবুদ হওয়ায় ১২ বছর ধরে বয়ে বেড়ানো এক লজ্জা থেকে যে মুক্তি পেল সাকিব-মুশফিকরা।
বিশ্বকাপ ইতিহাসে টেস্টখেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে এতদিন সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ডটি নিজেদের করে রেখেছিল বাংলাদেশ। দুই যুগ আগের সে বাজে রেকর্ড থেকে শ্রীলঙ্কা এবার মুক্তি দিল টাইগারদের। চলতি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। তাতে ৫০ ওভারের বিশ্ব আসরে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটি নতুন করে লিখিয়েছে লঙ্কানরা।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ১২তম বিশ্ব আসরের রাউন্ড রবিন লিগের ৩৩তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুভমান গিল, বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারের শতকের কাছাকাছি ইনিংসে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় ভারত। জবাব দিতে নেমে মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজের বোলিং তোপে ১৯.৪ ওভারে মাত্র ৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা।
আর এতে ৩০২ রানের বিশাল জয়ের কীর্তি গড়ে ভারত। এই বিশ্বকাপে ৩০০ রানের বেশি ব্যবধানেও এটি দ্বিতীয় জয়। এর আগে নেদারল্যান্ডসকে ৩০৯ রানের ব্যবধানে হারায় অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে এই পরাজয়ে লজ্জার রেকর্ডে নাম লেখাল শ্রীলঙ্কা। বিশ্ব আসরে এতদিন টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন রানে অল আউট হওয়ার রেকর্ডটি ছিল বাংলাদেশের। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ৫৮ রানে অল আউট হয়েছিল টাইগাররা। ৫৫ রানে অল আউট হয়ে যেটা এখন দখলে নিয়েছে লঙ্কানরা।
আর এতে নিজেদের ৪৮ বছর আগের লজ্জার রেকর্ডটিরও নতুন রূপ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ শুরুর প্রথম আসরে ১৯৭৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ৮৬ রানে অল আউট হয়েছিল তারা। বিশ্ব আসরে এটিই এতদিন তাদের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ছিল।
এদিকে টেস্টখেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ৫৫ রান হলেও বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটিই সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার নজির নয়। ২০০৩ সালে মাত্র ৩৬ রানে অলআউট হয়ে লজ্জার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল কানাডা। সে রেকর্ডে অবশ্য নাম আছে শ্রীলঙ্কারও। তারাই কানাডাকে এত অল্প রানে গুটিয়ে দিয়েছিল।
বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের মালিক যৌথভাবে কানাডা ও নামিবিয়া। ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কানাডা আর ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নামিবিয়া ৪৫ রানে অল আউট হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা আছে তালিকার চারে আর বাংলাদেশ পাঁচে।
মন্তব্য করুন