নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে অবস্থান করছে। প্রথম ম্যাচে কিউইদের কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর আজকের ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের সিরিজে ফিরে আসার। সেই লক্ষ্যে প্রথমে ব্যাটিং করে পাঁচ বছর পর সৌম্যর দুর্দান্ত এক শতকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যই দিয়েছিল বাংলাদেশ তবে সেটিও যথেষ্ঠ হলো না। টাইগারদের দেওয়া ২৯২ রানের টার্গেট সাত উইকেট হাতে রেখে অনায়াসেই পেরিয়ে যায় কিউইরা আর এতে বাংলাদেশের ম্যাচ ও সিরিজ হার নিশ্চিত হলো।
বাংলাদেশ দলের জন্য আজকের ম্যাচটি ছিল সিরিজ বাঁচানোর। সিরিজে টিকে থাকার এই ম্যাচে নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডকে ২৯২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিং সহায়ক পিচ আর বাংলাদেশের বোলারদের এলোমেলো বোলিংয়ে ৪৬.২ ওভারে সাত উইকেট হারিয়েই সেই রান তাড়া করে ফেলে কিউইরা। ব্লাকক্যাপসদের পক্ষে নিকোলাস ৯৫ ও ইয়াং ৮৯ রান করেন। আর বাংলাদেশের হয়ে দুইটি উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ।
বর্তমান ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৯২ রানের টার্গেট খুব বড় কিছু না তবে তবুও এই রান তাড়ায় ভালো শুরুর দরকার ছিল কিউইদের। সেই ভালো শুরুটাই এনে দেন দুই কিউই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র এবং উইল ইয়াং। তাদের আগ্রাসী ব্যাটিং এবং বাংলাদেশের পেসার লাইন-লেংথ ভুলে এলোমেলো বোলিংয়ে ওপেনিংয়েই ৭৬ রান করে ফেলে নিউজিল্যান্ড। তিন পেসার শরীফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব আর হাসান মাহমুদের কেউই সুবিধা করতে পারেননি কিউই ব্যাটারদের সামনে।
শুরুতে কিছুটা সাবধানী খেললেও যতই সময় গড়িয়েছে টাইগার পেসারদের ওপর ততই চড়াও হন ইয়াং এবং রাচিন। আগের ম্যাচেই দুর্দান্ত শতক হাঁকিয়েছিলেন ইয়াং। সেটাই ধরে রাখলেন সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও। আর রাচিন তো বিশ্বকাপ থেকেই আছেন দুরন্ত ফর্মে।
পাওয়ারপ্লের দশ ওভারে কিউইদের সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ৬১। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ১১তম ওভারে এসে ভেঙেছে এই দুজনের জুটি। দলীয় ৭৬ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৫ রান করে আউট হন রাচিন। হাসান মাহমুদের বলে রিশাদের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিরতে হয় রাচিনকে।
তবে রাচিন যাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশকে হতাশায় ডোবাতে থাকেন ইয়াং ও নিকোলাস। তাদের মধ্যকার ১২৮ রানের জুটি কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। বোলারদের বাজে বোলিং ও ব্যাটিং পিচ মিলে সহজেই লক্ষে পৌঁছাতে থাকেন তারা। দুই ব্যাটার নিজেদের অর্ধশতকও তুলে নেন।
যখন মনে হচ্ছিল টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শতক হাকাতে যাচ্ছেন ইয়াং তখনি হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত এক বলে তাকেই ফিরতি ক্যাচ দেন কিউই এই ওপেনার। এরপর আবারও একটা বড় জুটি দেখেছে নিউজিল্যান্ড। এদফায় নিকোলসকে সঙ্গ দিয়েছেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম। নিকোলসও পেতে পারতেন সেঞ্চুরি। তবে ৯৫ রানে ফিরতে হয়েছে তাকেও। রিশাদ হাসানের দিনের দ্বিতীয় ক্যাচ ছিলেন তিনি। উইকেট পেয়েছেন শরীফুল।
বাকি সময়টা আর ভুগতে হয়নি নিউজিল্যান্ডকে। দেখেশুনেই ম্যাচ শেষ করেছেন টম ব্লান্ডেল এবং টম ল্যাথাম। কিউইদের জয় এসেছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ইনিংস বলতে গেলে একাই টেনে নিয়ে গিয়েছেন সৌম্য সরকার। রানখরায় ভুগতে থাকা এই ব্যাটার দীর্ঘ ৫ বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। তার দুর্দান্ত ক্যারিয়ার সেরা ১৬৯ রানে বাংলাদেশ থামে ২৯১ রানে।
মন্তব্য করুন