টি-টোয়েন্টির এই যুগে ১৭৫ রানের টার্গেটকে খুব বড় বলা যায় না। তবে এই টার্গেটেই ৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বড় এক হারই চোখ রাঙাচ্ছিল বাংলাদেশের। সেই ভরাডুবির অবস্থা থেকেই দলকে ম্যাচে ফেরানোর সংগ্রাম শুরু করলেন রিশাদ। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন তাসকিন। দুজনে মিলে লঙ্কান বোলিং অ্যাটাকের ওপর ঝড় তুললেও ভরাডুবিকে জয়ে রূপান্তরিত করতে পারেননি তারা। ২৮ রানের পরাজয়ে সিরিজ খোয়াতে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
সিলেটে শনিবার (৯ মার্চ) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১৭৫ রান তাড়া করতে নেমে ২৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ১৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। রিশাদ রেকর্ড ৭টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৫৩ রান করে আউট হন। লঙ্কানদের পক্ষে ২০ রান খরচায় একাই ৫ উইকেট তুলে নেন নুয়ান থুশারা। যার মধ্যে রয়েছে হ্যাটট্রিকও।
১৭৫ রানের টার্গেটে খেলতে নামা বাংলাদেশকে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই এই সিরিজে প্রথমবারের মতো একাদশে সুযোগ পাওয়া নুয়ান থুশারা একাই ধ্বংসস্তূপ বানিয়ে দেন। ৩২ রান করতেই ৬ উইকেট হারানো টাইগাররা ১০০ করতে পারবে কি না এই নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। তবে ম্যাচে রিশাদ হোসেন একাই চেষ্টা চালান যাতে বাংলাদেশ অসম্ভব এক সমীকরণ মিলাতে পারে। সিরিজ হারলেও আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ছিল রিশাদের ব্যাটিং তান্ডব।
১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ইনিংসের শুরুতেই ওপেনার লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই শানাকার হাতে ক্যাচ বানান ৭ রান করা লিটনকে। এরপর বাকিটুক নুয়ান থুশারা স্টোরি। এই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে একাদশে ডাক পাননি, পাথিরানা ছিটকে যাওয়াতে আজ নামেন ম্যাচ খেলতে। প্রথম ওভারেই করেন বাজিমাত, মেডেন হ্যাটট্রিক। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে পঞ্চম হ্যাটট্রিক।
ওভারের প্রথম ডেলিভারি ডট খেলা বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত পরের বলে হয়েছেন বোল্ড, এরপর তাওহীদ হৃদয়ের অফ স্টাম্প উপরে ফেলেন, লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফেরান প্যাভিলিয়নে। হ্যাটট্রিকের পর সৌম্য সরকার ও শরিফুলকে বিদায় করে তুলেন ৫ উইকেটও। বাংলাদেশের আউট হওয়া প্রথম ৬ ব্যাটারের মধ্যে সৌম্যর ব্যাট থেকেই আসে সর্বোচ্চ রান (১১)। ১৩ বল খেলা জাকের আলি অনিক প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন মাত্র ৩ রানে। তাকে ফিরিয়ে উইকেটের দেখা পান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
এরপর শেখ মেহেদীকে নিয়ে লঙ্কান বোলারদের ওপর রীতিমতো চড়াও হন রিশাদ। হাসারাঙ্গা মেহেদীকে ফেরালেও তিনি ঝড় তুলতে থাকেন। ক্রিজে নেমে তার সঙ্গে যোগ দেন তাসকিন আহমেদও। ২৪ বলে ৭ ছক্কায় ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন রিশাদ। একসময় মনে হচ্ছিল সুযোগ পেলে হয়ত ম্যাচই বের করে ফেলবেন তিনি।
রিশাদ এদিন ৭ ছক্কা হাঁকিয়ে যান তখন জয়ের আশাও জেগেছিল বাংলাদেশ শিবিরে। ১৬ ওভার শেষে শান্ত বাহিনীর রান তখন ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৫। রিশাদ ২৭ বলে ৫২ আর তাসকিন ৭ বলে ১৩ রানে অপরাজিত। জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে দরকার ছিল ৬০ রান। কিন্তু পরের ওভারে রিশাদ আউট হওয়ায় সে আশা বেশিক্ষণ টেকেনি। মহিশ থিকশানার শিকার হয়ে ৩০ বলে ৫৩ রানে থামে রিশাদের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
মন্তব্য করুন