দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে নতুন এক ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা পাঁচ জয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে বাটলার বাহিনী। আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সন্ধ্যা ৭টায় শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে শক্তিশালী নেপালের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজরা। এক ড্র-ই যথেষ্ট শিরোপা ধরে রাখার জন্য, তবে হারলেই সেই ট্রফি চলে যাবে হিমালয়ের দেশে।
দুই দলই এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। তবে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। পাঁচ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা লাল-সবুজদের সামনে ড্র করলেই নিশ্চিত হবে শিরোপা। অন্যদিকে ১২ পয়েন্ট পাওয়া নেপালের জিততেই হবে—তাহলেই গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হবে তারা।
এই টুর্নামেন্টেই একবার দেখা হয়েছিল দুই দলের। সেই ম্যাচে ৩-২ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে জয়টা সহজ ছিল না। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ২-২। অতিরিক্ত সময়ে তৃষ্ণা রানীর নাটকীয় গোলে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। আজকের ম্যাচেও তেমনি লড়াইয়ের অপেক্ষায় দর্শকরা।
নেপাল এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে ৩০ গোল করেছে, হজম করেছে মাত্র ৪টি। হার একটিই—বাংলাদেশের বিপক্ষে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সব ম্যাচ জিতে এসেছে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে। শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি থাকলেও খেলোয়াড়দের মধ্যে শিরোপার জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
টানা ম্যাচের কারণে মাঠের অনুশীলনের সুযোগ না পেলেও হোটেলে রিকভারি সেশন, জিম, সুইমিং ও স্ট্রেচিং করে নিজেদের তৈরি রেখেছে বাংলাদেশ। ভিডিও অ্যানালাইসিস আর টিম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ বিশ্লেষণ করে নিজেদের কৌশল সাজিয়েছে কোচ বাটলার।
ইনজুরি নিয়ে কোনো বড় চিন্তা নেই লাল-সবুজ শিবিরে। অভিজ্ঞ আফঈদা, স্বপ্না, শান্তি মার্ডির পাশাপাশি আছেন তরুণ প্রতিভা তৃষ্ণা, পুজা, মুনকি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাগরিকা, যা দলের শক্তি বাড়াবে।
নিজের ঘরের মাঠ, ভরপুর গ্যালারি আর জয়ের ধারাবাহিকতা—সবমিলিয়ে বাংলাদেশ দলের সামনে রয়েছে স্বপ্নের মতো এক সুযোগ। নেপাল যে কঠিন প্রতিপক্ষ তা জানা আছে বাটলারের। তবু দল আত্মবিশ্বাসী, শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে শেষ ম্যাচেও তাদের লক্ষ্য একটাই—জয়।
সন্ধ্যার ম্যাচে উত্তেজনার পারদ এখনই চরমে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই সেরা নারী ফুটবল শক্তির এই মুখোমুখি লড়াইয়ে ফুটে উঠবে সাফের অন্যতম স্মরণীয় এক অধ্যায়—যেখানে চোখ থাকবে বাংলাদেশের শিরোপা মঞ্চে উল্লাসে ভাসার দিকে।
মন্তব্য করুন